বিপদে ধৈর্য ধারণের তাৎপর্য

0
1226
blank
blank

এস এম আরিফুল কাদের :

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। জীবন চালাতে মাঝেমধ্যে ভালো ও মন্দ কাজের মুখোমুখি হতে হয়। ভালো ও মন্দ সব আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে। তিনি যা ইচ্ছা করেন।

তাঁর ইশারা ছাড়া কিছুই হতে পারে না। আর তিনি মানুষের জন্য যখন যা নির্ধারণ করেন তা অবশ্যই তার জন্য মঙ্গলজনক। যদিও তা কিছু সময়ের জন্য বাহ্যিকভাবে কষ্টকর মনে হয়। মূলত এসব দিয়ে তিনি আমাদের ইমান যাচাই করতে চান। কোরআনের ভাষায়, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের কিছু ভয় ও ক্ষুধা, জান ও মাল এবং ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করব। (হে পয়গম্বর!) আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিন। ’ সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৫।

ধৈর্যহারা হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মোমিনের কাজ নয়। আল্লাহর তরফ থেকে যতই বিপদ আসুক না কেন তাতে নিরাশ না হয়ে ধৈর্য ধরে সফলকাম হওয়া যায়। পক্ষান্তরে অধৈর্য হয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ রব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘মহাকালের শপথ! মানুষ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত; কিন্তু তারা নয় যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্যের উপদেশ দেয়। ’ সুরা আসর, আয়াত ১-৩।

বিপদে ধৈর্যহীন না হয়ে মাওলার জিকিরে আত্মনিয়োগ করে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। তাই ধৈর্যের গুরুত্ব ও তাৎপর্য উল্লেখপূর্বক রসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের কারও ওপর বিপদ এলে সে যদি বলে, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজুরনি ফি মুসিবাতি ওয়াখলিফলি খাইরাম মিনহা। অর্থ : নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা নিশ্চয়ই তাঁর কাছে ফিরে যাব। হে আল্লাহ! আমাকে আমার বিপদের উত্তম প্রতিফল দান করুন এবং বিপদকে আমার জন্য কল্যাণে পরিবর্তন করে দিন। তাহলে আল্লাহ তার বিপদকে কল্যাণে পরিবর্তন করে দেন।’ মুসলিম।

বিপদাপদে একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়ে সম্ভব হলে সাহায্য করা। এতটুকু করার ক্ষমতা না থাকলে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে অন্তত সান্ত্বনা দিয়ে মানবতা দেখানো; যাতে উভয়ের জন্য কল্যাণ রয়েছে। বিশ্বনবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বিপদগ্রস্তের প্রতি ধৈর্যের সমবেদনা প্রকাশ করবে, তাহলে স্বয়ং ওই বিপন্ন ব্যক্তি সবর করলে যে সওয়াব পায়, সমবেদনাকারীও অনুরূপ সওয়াব পাবে। ’ তিরমিজি। দুনিয়ায় মানুষের বিপদাপদ আসা স্বাভাবিক। বিপদে ভেঙে পড়তে নেই। প্রয়োজন ধৈর্য ধারণের। পরম করুণাময় এর বিনিময়ে মোমিন বান্দাদের গুনাহ মাফ করে দেন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

[ সৌজন্য : বাংলাদেশ প্রতিদিন]