শিব্বির আহমদ ওসমানীঃ হঠাৎ দেখা থেকে পরিচয়। পরিচয় থেকে ভাবের আদান-প্রদান। ভাবের আদান-প্রদান এক সময় প্রেমে রুপ নেয়। দীর্ঘদিন ধরে প্রেম চলছিল প্রেমিক-প্রেমিকার। হোটেলে পার্কে খাওয়াদাওয়া বেড়ানো চলছিল নিয়মিত। একে অপরের বুকে মাথা রেখে কত স্বপ্ন বুনেছিল তারা। লাইলি মজনুর বেশে দেহের আদান-প্রদানও চলতো সুযোগে সুবাদে। এ ছিল যেন এক মধু বরা ভালবাসা।
অনেকদিন পর কুড়ি বয়সের প্রেমিকার সাথে পরিচয় ঘটে অপর এক যুবকের। পরিচয় থেকে নতুন প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় কুড়ি বয়সের বালিকা। আগের মত মধুর আদান-প্রদানও চলছে নিয়মিত। তখন থেকেই পুরাতন প্রেমের গণেশ পাল্টে যেতে শুরু করে। দিনদিন নতুন প্রেম যত গভীর হতে থাকে পুরাতন প্রেমিকের সাথে চলনা ততই বাড়তেই থাকে।
লুকিয়ে চুরি করে কতদিন ডাবল সেঞ্চুরি করা যায়। সময়ের সাথে প্রেমিকার আচরণের পরিবর্তনের আবাসে পুরাতন প্রেমিকের মনে সন্দেহ জন্মে। সন্দেহ ঠিক একদিন সত্যি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ায় শুরু হয় তাদের মাঝে স্নায়ু যুদ্ধ। এ যুদ্ধ এত সহজে বিষাদে রূপান্তরিত হবে কেহ জানতো না।
শুরু হয় নয়া-পুরাণের অসম প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতার মাঝে চলতে থাকে প্রেম। নতুনের দাপটে পুরাতন প্রেমিক চলনার শিকার হতে থাকে। তাও ঠিকমত চলছিল না। কারণ পুরোনো ঝুঁকি নিতে রাজি নয় নতুন। নতুন ঝুটি পুরাতন জঞ্জাল দূর করার পরিকল্পনা করতে করতে একদিন সিদ্ধান্তে উপনিত হয় পুরাতনকে বিদায় করার।
নতুন ঝুটির পরিকল্পনা মুতাবেক চলনার বিষাক্ত সুরে পুরাতন প্রেমিককে মধু মাখিয়ে ঘুম পাড়ানোর ইচ্ছা পূষন করলে সে-ও মধু খাওয়ার নেশায় বিভোর হয়ে চিরচেনা হোটেলে একসাথে আাসে। যখন সে মধুর নেশায় মত্ত তখনই ছলনাময়ী বিষের চুবল মারতে ব্যস্ত। সে এতই বিভোর ছিল যে নাগিনীর হাসির মাঝে বিষাক্ত দাত দেখতে পায়নি।
ছলনার আড়ালে চলছে মধুচন্দ্রিমা। ছলনার ছলে তাকে শেষবারের মত এমন খাওয়ানো খাওয়ায় ক্লান্ত হয়ে তারা একটু ঘুমুতে চায়। একজন মনে মনে প্রশান্তি অনুভব করছে আরেকজন মনে মনে চুবলের প্রহর গুনছে। সুযোগে নাগিনী তাকে ঘুমের বড়ি ও বিষ খাওয়ায়। প্রেমিকার বুকে জীবনের জন্য ঘুমিয়ে পরে। এভাবেই বিষে একটি প্রেমের সমাপ্তি ঘটায়।
[সম্প্রতি সিলেটে এক শিক্ষকের লাশ উদ্ধারের পর সন্দেহভাজন প্রেমিক ঝুটি গ্রেফতারের পর আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে যে জবানবন্দি দেয় তার আলোকে একটি অনু গল্প।]
লেখক: শিক্ষক, সাংবাদিক ও উদ্যোক্তা।
■ Facebook: https://www.facebook.com/ShibbirAOsmani