বোরকা পরে হোটেলে গিয়েছিলেন তুরিন আফরোজ

0
573
blank
blank

ঢাকা: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে পেশাগত অসদাচরণ, শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রসিকিউটর ড. তুরিন আফরোজকে অপসারণ করা হয়েছে।

তুরিনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ এবং অভিযোগের স্বপক্ষে যথাযথ প্রমাণ রয়েছে বলেও নিশ্চিত করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ট্রাইব্যুনালের আরেক প্রসিকিউটার জিয়াদ আল মালুমও সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, অপরাধীর সঙ্গে তিনি যে কথা বলেছেন তার রেকর্ড আমাদের কাছে আছে। সেখানে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তার (তুরিন আফরোজের) গলা প্রমাণিত হওয়ায় আমরা তাকে অপসারণ করেছি।
এর আগে চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখা থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। এরপর তাকে মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার ওয়াহিদুল হকের মোবাইল ফোনে থাকা দুই অডিও রেকর্ডের কারণে ফেঁসে যান তুরিন আফরোজ।
রাজধানীর গুলশান থেকে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা-এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ওয়াহিদুল হককে গ্রেফতার করে গুলশান পুলিশ।
ওই সময় তার মোবাইল ফোনটিও জব্দ করে পুলিশ। পরে সেটি পরীক্ষা করতে গিয়ে দুটি অডিও রেকর্ড পাওয়া যায়। ওই অডিওতে তার সঙ্গে তুরিনের যোগাযোগের তথ্য ছিল। দুটি অডিওর মধ্যে একটি টেলিফোন কথোপকথনের রেকর্ড। এটি চার মিনিটের মতো। অন্য অডিওটি ওই গোপন বৈঠকের, প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টার মতো।
অভিযোগ উঠে, ওয়াহিদুল হককে গ্রেফতারের আগে গত নভেম্বরে তুরিন আফরোজ প্রথমে তাকে টেলিফোন করে দেখা করার সময় চান। এর পর একটি হোটেলে ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে গোপন বৈঠকও করেন তিনি।
তদন্ত সংস্থার সিনিয়র সমন্বয়ক সানাউল হক বলেন, তাদের টেলিফোনে কথা হয় গত বছরের ১৮ নভেম্বর। আর পর দিন ঢাকার অলিভ গার্ডেন নামে একটি রেস্তোরাঁর গোপন কক্ষে বৈঠকটি হয়। সেখানে তুরিন আফরোজ, তার সহকারী ফারাবি, আসামি ওয়াহিদুল হকসহ মোট পাঁচজন ছিলেন।
তিনি জানান, টেলিফোন রেকর্ডে তুরিন আফরোজ জানিয়েছেন যে তিনি বোরকা পরে ওই হোটেলে যাবেন। তার সঙ্গে থাকবে সহকারী ফারাবি, যাকে তিনি নিজের স্বামী পরিচয়ে সেখানে নিয়ে যাবেন।
প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র বিরোধিতার অভিযোগ এনে বলেন, শুধুই পেশাগত অসদাচরণ নয়, তিনি ফৌজদারি অপরাধও করেছেন। তার কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রবিরোধিতার সামিল। কারণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুণালের বিচার কার্যক্রম রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। তাই তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা করি। তুরিন বোরকা পরে হোটেলে গিয়েছিলেন।