নিজস্ব প্রতিবেদক: সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবং সেই জোটের এক সভায় সরকারের যোগদান একটি গুরুতর ভুল পদক্ষেপ। সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ শুক্রবার এক বিবৃতিতে একথা বলেন।
তারা বলেন, সৌদি আরব মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল এবং হানাদার বাহিনীকে অস্ত্র, অর্থ, কুটনৈতিক মদদ দিয়েছিল। একাত্তরের গণহত্যার সহায়তাকারীর দায় থেকে সৌদি আরব মুক্ত নয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত সে দেশটি তাদের ভুল স্বীকার এবং সে কারণে ক্ষমা প্রার্থনা করেনি।
সিপিবি নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে আরো বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কয়েক যুগ ধরে ‘জোট নিরপেক্ষতার’ নীতির স্বপক্ষে আগাগোড়া সংগ্রাম করেছে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে ‘জোট নিরপেক্ষতার’ নীতি একাগ্রভাবে অনুসরণ করে এসেছে। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে যোগদান দীর্ঘদিনের সেই পরীক্ষিত নীতি একটি বিপদজনক পদস্খলন। সৌদি সামরিক জোটে যোগদান দেশের আন্তর্জাতিক নীতি সম্পর্কে সংবিধানে বর্ণিত নির্দেশনারও বরখেলাফ। তাই, এই সামরিক জোটে বাংলাদেশের যোগদানের ঘটনা হলো মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি অবমাননাকর ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-ধারার পরিপন্থী।
বিবৃতিতে বলা হয় যে, আরো বিপদজনক ঘটনা হলো- সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে শরিক দেশগুলোর সরকার প্রধানদের আসন্ন বৈঠকে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প যোগদান করবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিবেন। সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদদপুষ্ট ও তাবেদার একটি জোট এ ঘটনার মধ্য দিয়ে সেকথা প্রমাণিত হয়ে গেল। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে যে দ্বন্দ্ব-বিভেদ-বিভাজন তাতে বাংলাদেশ নিজেকে জড়িয়ে ফেললো এবং মার্কিন-সৌদি লবিতে নিজেকে এভাবে অন্তর্ভূক্ত করে ফেললো। এ কাজ বিপদজনক ও জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার জন্য হুমকীস্বরূপ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, জোট নিরপেক্ষ, প্রগতিশীল পররাষ্ট্র নীতির ধারায় দেশ পরিচালনার পথে ফিরে আসার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। এই লক্ষ্যে সোচ্চার হওয়ার জন্য নেতৃবৃন্দ সব দেশপ্রেমিক, প্রগতিবাদী শক্তি ও আপামর জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।