মাহিন হত্যা মামলা প্রেম ঘটিত না রাজনৈতিক? মাহিন হত্যার অন্তরালের ঘটনা রহস্যে ঘেরা!

0
428
blank
নিহত মাহিন
blank
অভিয্ক্তু রিয়াজ শেখ
অভিয্ক্তু রিয়াজ শেখ

সরেজমিন প্রতিবেদন, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

ধোপখলা গেন্ডারিয়া এলাকায় অবস্থিত ছনঘর রেস্টুরেন্টে গত ১৩ই ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যা- ৭.৩০মিঃ এর সময় মাহিন নামের একজন যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে অপ‚র্যপরী আঘাত করে ঘটনাস্থলে নির্মমভাবে হত্যা করে কয়েকজন সন্ত্রাসী বীরদর্পে চলে যায়। মারাত্মক আহত অবস্থায় মাহিন পড়ে থাকে ছনঘর রেস্টুরেন্টের কোরিডোরে। রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার সোহরাব হোসেন নয়ন পুলিশকে ফোন করলে গেন্ডারিয়া থানার এস, আই সমীরন দাশের নেতৃত্বে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল হতে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ১৩ই ডিসেম্বর ২০১৭ইং সালে সন্ধ্যা-৭.৩০মিঃ এর সময় ধোপখলাস্থ ছনঘর রেস্টুরেন্টে বসে নাস্তা করছিল মাহিন। তখন একদল সন্ত্রাসী ধারালো রামদা, চাপাতি দিয়ে আকস্মিক হামলা করে মাহিনের উপর। তার পিঠে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে গভীর কাটা জখম হয়।

অপর সন্ত্রাসী তার বাহুতে চাপাতি দিয়ে কোপ দিলে তার বাম হাতের বাহু হতে বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার মাথায় আঘাত করা মাত্র মৃত্যু হয় মাহিনের। এ বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত করে পুলিশ। তাৎক্ষনিক মাহিনের পক্ষে এজাহার দাতা পাওয়া না যাওয়ায় পুলিশের এস, আই সমীরন দাশ বাদী হয়ে সাধনা ৮৮,০১/এ, দিন্নাত সেন রোড, গেন্ডারিয়া, ঢাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম শেখ এর ছেলে রিয়াজ শেখকে প্রধান আসামী করে আরও অজ্ঞাত ছয়জন সহ মোট ৭জনের বিরুদ্ধে গেন্ডারিয়া থানায় মামলা রুজু করে। এলাকাবাসীর অনেকেই জানান মাহিনের সাথে অসামীর ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব ছিল। মাহিন ও রিয়াজ শেখের মধ্যে কোন রাজনৈতিক দন্ধ বা প‚র্ব শত্রæতা ছিল না। তবে কেন রিয়াজ শেখ মাহিনকে খুন করবে তা তাদের বোধ গম্য নয়। অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধোপখলা ও দিন্নাত সেন রোডের বাসিন্দা কয়েকজন যুবক জানান, মাহিনের সাথে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের ছত্র ছায়ায় লালিত রাজিব হোসেন এর প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। তাছাড়া মাহিন রাজিব হোসেনের বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছিল। এসব বিষয় নিয়ে মাহিনের সাথে রাজিব হোসেনের কয়েকবার কথা কাটা-কাটি হয়। ঘটনার দিন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী রাজিব হোসেন তার দল বল নিয়ে মাহিনকে কুপিয়ে হত্যা করে। এজাহার নামীয় প্রধান আসামী রিয়াজ শেখের পিতা নুরুল ইসলাম শেখ ও মাতা রাশিদা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, মাহিন রিয়াজ শেখের ঘনিষ্ট বন্ধু ছিল। তাছাড়া ঘটনার দিন অভিযুক্ত রিয়াজ শেখ কুমিল্লা জেলায় একটি বিয়ের অনুষ্টানে ছিল। সে কোন ভাবেই মাহিনকে হত্যা করতে

পারে না। গেন্ডারিয়া থানার পুলিশের এস, আই বর্ণিত হত্যা মামলার বাদী সমীরন দাশ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হরুনুর রশিদ জানান, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। চার্জশীটের প‚র্বে বিস্তারিত তদন্তসহ রেস্টুরেন্টের সি, সি, টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত কোন ব্যাক্তি সংযোজন বা বিয়োজন হতে পারে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলতে উভয় কর্মকর্তা অনীহা প্রকাশ করেন। ছনঘর রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার সোহরাব হোসেন নয়ন এর নিকট সি, সি, টি, ভি রেকর্ডের ফুটেজ চাইলে থানার অনুমতি ব্যতিত তিনি তা দেখাতে বা সরবরাহ করতে অপারগ বলে জানান। স্থানীয় দিন্নাত সেন রোডের বাসিন্দা অনেকেই জানান, অভিযুক্ত রিয়াজ শেখ প্রকৃত হত্যাকারী নয়। প্রকৃত হত্যাকারী অত্যন্ত প্রভাবশালী সন্ত্রাসীদের রক্ষা করতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে হত্যা কান্ডের মোটিভ পরিবর্তন করা হয়েছে। মাহিন হত্যার আসল রহস্য উদঘাটিত হোক, হত্যাকারী প্রকৃত অপরাধী শাস্তি পাক এটাই এলাকাসী কামনা করেন।