মা ও সন্তানের সাথে চিরনিদ্রায় শায়িত আনিসুল হক

0
478
blank

বনানী কবরস্থানে মা ও ছোট সন্তান শারাফের সাথে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। আজ বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে তার দাফন সম্পন্ন হয়।এর আগে বিকেল সোয়া ৪টায় রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার হাজারো মানুষের ঢল নামে। এর আগে সর্বস্তরের মানুষ তাদের প্রিয় মেয়রের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।

জানাজার আগে আনিসুল হকের একমাত্র ছেলে নাভিদুল হক বলেন, ‘আমার বাবা ছিলেন একজন সৌখিন মানুষ। তিনি সুখী ও হাসি-খুশি মানুষ ছিলেন। দেশবাসীর কাছে বাবার জন্য দোয়া চাই। ’

কাজের খাতিরে কেউ যদি আমার বাবার ব্যবহারে দুঃখ পেয়ে থাকেন তাহলে আপনারা তাকে ক্ষমা করে দিয়েন।

গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা আনিসুল হকের প্রথম নামাজে জানাজা লন্ডনের রিজেন্ট পার্ক সেন্ট্রাল মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে বিকেল ৩টার পর বনানীর বাসা থেকে বের হয়ে আনিসুল হকের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি বিকেল সাড়ে ৩টায় আর্মি স্টেডিয়ামে পৌঁছায়।

দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে। সেখানে পরিবারের পক্ষে ভাই সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক মরদেহ গ্রহণ করেন। সেখান থেকে দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে তার মরদেহ বনানীর বাসায় নেয়া হয়।
বিমানবন্দরে মেয়রের লাশ গ্রহণ করতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি শফিউল আলম মহিউদ্দিন ও বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিমানবন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাজাহান আলী মন্ডলসহ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনিসুল হকের বনানীর বাসায় যান। তিনি মরহুমের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান এবং তাদের সাথে কিছু সময় কাটান।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ শত শত মানুষ আনিসুল হকের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে তার বাসায় ছুটে যান।

বনানীর ২৩ নম্বর সড়কের এ বাসা থেকেই গত ২৯ জুলাই নাতির জন্ম উপলক্ষে ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে লন্ডনে যান আনিসুল হক। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৩ আগস্ট তাকে লন্ডনের ন্যাশনাল নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার মস্তিষ্কে প্রদাহজনিত রোগ ‘সেরিব্রাল ভাস্কুলাইটিস’ শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা। প্রায় সাড়ে তিন মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন।