মৃত্যু পরোয়ানা শুনে স্বাভাবিক মাওলানা নিজামী, রিভিউ করবেন

0
515
blank
blank

গাজীপুর: মানবতাবিরোধী অপরাধে চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যু পরোয়ানা পাঠ করে শোনানো হয়েছে। মৃত্যু পরোয়ানা শুনে তিনি স্বাভাবিক ছিলেন এবং আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করে রিভিউ করবেন বলে জানিয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ০৫ মিনিটে নিজামীকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের পার্ট-২ এ এই মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। কাশিমপুর কারাগারের জেলার নাসির আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বুধবার সকালে নিজামীর মৃত্যু পরোয়ানা কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছে। গতকাল নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহালের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর রাতে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সর্বোচ্চ আদালতের রায় ঘোষণার প্রায় আড়াই মাস পর গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বিচারকেরা সেই রায়ে সই করেন। এরপর সন্ধ্যায় তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয় বলে জানা যায়। বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারক রাত ৯টার দিকে আসামির মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেন। লাল সালুতে মুড়ে এই মৃত্যু পরোয়ানা রাত সাড়ে ৯টার পর ট্রাইব্যুনাল থেকে পাঠানো হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। সেখান থেকে পরোয়ানা আজ সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
নিয়ম অনুযায়ী রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে। মৃত্যু পরোয়ানা হাতে পেলে আসামিকে তা পড়ে শোনাবে কারা কর্তৃপক্ষ। ওই পরোয়ানার ভিত্তিতেই শুরু হবে সাজা কার্যকরের প্রস্তুতি।
গত বছরের ০৬ জানুয়ারি মতিউর রহমান নিজামীকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় আপিল বিভাগ বহাল রাখেন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ করতে পারবে আসামিপক্ষ। ইতোমধ্যে আসামিপক্ষ জানিয়েছে, এ ব্যাপারে তারা রিভিউ করবেন। রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে শুধু থাকবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার বিষয়টি। রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করলে দণ্ড কার্যকর করবে সরকার।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ২৩ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্টে আপিল করেন নিজামী। ৬,২৫২ পৃষ্ঠার আপিলে ফাঁসির আদেশ বাতিল করে খালাস চান তিনি। মোট ১৬৮টি কারণ দেখিয়ে এ আপিল করা হয়।
এরপর দীর্ঘ শুনানি শেষে গত বছরের ০৬ জানুয়ারি মতিউর রহমান নিজামীকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় আপিল বিভাগ বহাল রাখেন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একই বছরের ২ আগস্ট এক আবেদনে ট্রাইব্যুনালের আদেশে তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তখন থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
এছাড়া, চট্টগ্রামে আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত রয়েছেন বিগত চারদলীয় জোট সরকারের শিল্প ও কৃষিমন্ত্রী এবং জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা নিজামী। ২০১০ সালের ২৯ জুন থেকে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে আছেন।