সিলেট: ১৯৮৬ সালের আগস্ট মাসে যাত্রা শুরু হলেও এখনো শিশুই রয়ে গেছে দেশের অন্যতম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি।বাংলাদেশের প্রবাসী অধ্যুষিত নগরী সিলেটে প্রতিষ্টিত বিশ্ববিদ্যালয়টি মাঝে মাঝে তার জৌলুস প্রদর্শন করলেও বেশিরভাগ সময় থাকে জৌলুসহীন। প্রকৌশলী হবার স্বপ্নে যারা বিভোর তাদের কাছে শাবিপ্রবি একটি রাজ্যের নাম।দেশের বাছাইকরা শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর ভর্তি যুদ্ধে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করে এখানে ভর্তি হয়।ভর্তি হওয়ার পরেই ধরা পরে নানা অসংগতি ফলে অনেকে দ্বিতীয়বার অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে চলে যায়।
জানা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনেক বিভাগে প্রয়োজনীয় ল্যাব কাগজে কলমে থাকলেও ল্যাবে নেই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। অনেক বিভাগে মান্দাতার আমলের বিভিন্ন মেশিনে চলছে গবেষণার কাজ। কিছু জায়গায় সেই মেশিনগুলোই অকেজো হয়ে পড়ে আছে।ল্যাব ক্লাশরুমের অবস্থা আরো করুণ। কোথাও ক্লাশরুম ভেংগে কোনভাবে জোড়াতালি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ল্যাব আবার কোথাও খুবই অল্প জায়গায় দায়সারাভাবে তৈরিকৃত ক্লাশে ঠিকমত শিক্ষার্থীধারণ সম্ভব হচ্ছেনা।তীব্র গরমে গাদাগাদি করে ক্লাশ করতে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। শিক্ষকদের অনেকেই জানিয়েছেন একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার পর জোর দেয়া হয় গবেষণায় অথচ এই খাতটিই এখানে সবচেয়ে অবহেলিত। নতুন জ্ঞান সৃষ্টির প্রত্যয়ে যে প্রতিষ্টানের যাত্রা শুরু হয়েছে তার এমন ভংগুর অবস্থা হতাশ করছে সচেতন মহলকে।দেশের নামকরা এই প্রতিষ্টানটির আবাসন ব্যবস্থা নিয়েও রয়েছে সমস্যা। প্রায় বারো হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র ৫ টি হল কোনভাবেই শিক্ষাবান্ধব অবস্থা প্রকাশ করেনা বলে মনে করেন বুদ্ধিজীবী মহল।এ দিকে মনযোগী হতে কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে।বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এই দুটো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে সিলেটের দুজন বিশিষ্ট ব্যাক্তির উপস্থিতি সত্ত্বেও এ অঞ্চলের উচ্চশিক্ষার প্রধান সূতিকাগারের এই অবস্থা মানতে পারছেন না কেউ কেউ।তারা বলছেন কর্তৃপক্ষ চাইলেই বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার শাবিপ্রবির দিকে নজর দিবে।কিছু জায়গায় কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতা অবাক করার মত। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এখানে রাজনৈতিক সহাবস্থান অনেক ভালো থাকার কারনে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষাগুলো অনুষ্টিত হচ্ছে কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং রিসার্চের সুযোগের অভাব সৃষ্টি করেছে হতাশার।
একজন শিক্ষাবিদের কাছে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কেন্দ্রীয় গবেষণাগার স্থাপন এবং সরকারের উর্ধতন মহলে সহযোগীতার প্রস্তাব পৌছাতে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার জন্য কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা কামনা করেন।ক্লাশরুমের সংকট কাটানো এবং গ্যালারি ভিত্তিক শ্রেণী নির্মাণ জরুরী। যেখানে শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষের অভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে সেখানে পড়ালেখার সুষ্টু পরিবেশ আছে এমনটা বলা যায়না।শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিকতার কারনে এসব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে। বর্তমান শাবিপ্রবির এই অবস্থা দেখে আফসোস করছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা।তারা সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগীতা চেয়েছেন।