ঢাকা: স্বাধীনতা অর্জনের পরে পুনরায় পাকিস্তান রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র না হলে, বাংলাদেশ এখন উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতো বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। এ ছাড়া ১৯৮০ দশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হত। ‘দশম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো ও সেমিনার’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা করেন।
এ সময় মন্ত্রী জানান, শতবছরের পুরনো ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সাইন্স এসোসিয়েশন বিশ্বব্যাপি সমাদৃত একটি সংগঠন। এটি ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে। এই সংগঠনটি দেশের আমিষ চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি আরও জানান, ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পোল্ট্রি খাতের উন্নয়নে কাজ করেছে। কিন্তু ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার সময় এই শিল্পটি ধ্বংসের পথে ছিল। অনেক পোল্ট্রি ফার্ম নিঃশ্বেস হওয়ার পথে ছিল। তবে আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরে এই খাতটিকে রক্ষা করে। একইসঙ্গে এই সরকার পোল্ট্রি খাতের সহযোগিতায় ভবিষ্যতেও পাশে থাকবে।
বিশেষ অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানান, বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে কৃষিখাতের প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। যেখানে পোল্ট্রিখাতের ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে এই খাত কর্মসংস্থানের অন্যতম মাধ্যম। যেখানে ৬০-৭০ লাখ মানুষ জড়িত। এছাড়া এই খাতে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পোল্ট্রিখাত হতাশাগ্রস্তদের আলোকিত করেছে। একইসঙ্গে মাংস ও ডিমের বড় যোগান দিয়ে যাচ্ছে। এই পোল্ট্রি শিল্প না থাকলে, মাংস এখন নাগালের বাইরে থাকতো।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য প্রফেসর ড. সাত্তার মন্ডল বলেন, বাংলাদেশের মোট খাদ্য সরবরাহের ১০.৩১ শতাংশ মাংস এবং ডিম আসে পোল্ট্রি খাত থেকে। সুতরাং এ শিল্পের উন্নতির জন্য নীতি-সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। কর আরোপের ক্ষেত্রে যৌক্তিকতা বিবেচনা করতে হবে। ক্ষুদ্র খামারি ও ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তা দিতে হবে।
ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সাইন্স এসোসিয়েশনের বাংলাদেশ শাখার সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ ডিমের মাথাপিছু বার্ষিক কনজাম্পশন ৫১ থেকে বাড়িয়ে অন্তত ৮৫ তে এবং মুরগির মাংসের মাথাপিছু বার্ষিক কনজাম্পশন ৪.২ কেজি থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ কেজিতে উন্নীত করতে চায় পোল্ট্রি শিল্প। এছাড়া অপুষ্টির হার কমিয়ে আনতে অবদান রাখতে চায় এই শিল্প। সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) এর ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ৭টির সাথেই পোল্ট্রি শিল্পের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তাই এ শিল্পের প্রতি আলাদাভাবেই গুরুত্ব দিতে হবে। এডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) পোল্ট্রি উদ্যোক্তাদের জন্য যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই শিল্পে এআইটি রহিত করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে পোল্ট্রি গবেষণায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য অমৃতা পণ্ডিত ও বিপুল চন্দ্র রায়কে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া পোল্ট্রি শিল্পের অগ্রপথিক হিসেবে প্রয়াত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। প্রয়াতের নাতনি এ সম্মাননা গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ৩দিনব্যাপি দশম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো ও সেমিনারে ১৪৭টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। এতে ২০টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ৪৯০টি স্টলে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য তুলে ধরেছে। দশম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো ও সেমিনারের আয়োজন করেছে ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সাইন্স এসোসিয়েশনের বাংলাদেশ শাখা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সাইন্স এসোসিয়েশনের বাংলাদেশ শাখার সভাপতি সামসুল আরেফিন খালেক।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.