সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা তিনগুণ বেড়েছে: হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ

0
449
blank
blank

ঢাকা: বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,  ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালের প্রথম তিন মাসেই প্রায় তিনগুণ সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। গত তিন মাসে ৮২৫০টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে নিহত, আহত, অপহরণ, জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত, গণধর্ষণ, জমিজমা, ঘরবাড়ি, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও উচ্ছেদের ঘটনা রয়েছে।

শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত এ তথ্য তুলে ধরেন।  লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের বাংলাদেশের সংখ্যালঘু মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছিলাম  তাতে ২৬১টি আলাদা ঘটনা সারা দেশে সংঘটিত হয়েছিল। বেশির ভাগ একক ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার সংখ্যা কমপক্ষে ১৫৬২টি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ২০১৫ সালে বাংলাদেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে যে মানবাধিকার পরিস্থিতি ছিল এ মুহূর্তে তা আরও ভয়াবহ পর্যায়ে রয়েছে।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ২০১৬ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত  প্রথম তিন মাসে সংখ্যালঘুদের ওপর কমপক্ষে ৭৩২টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, যা পূর্ববর্তী বছরের ঘটনার প্রায় তিনগুণ। এসবের বেশির ভাগ একক ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার সংখ্যা কমপক্ষে ৯৫৬৬ যা পূর্ববর্তী বছরের ছয়গুণেরও বেশি। এ সময়ে নিহত ১০ জন, আহত ৩৬৬ জন, অপহরণের শিকার হয়েছেন ১০ জন। তাদের মধ্যে জোরপূর্বক ধর্মান্তরের অভিযোগ রয়েছে ২টি। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮ জন। জমিজমা, ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, দখল ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ৬৫৫টি। ২২টি পরিবারকে উচ্ছেদের হুমকি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই সময়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শুধু এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৮২৫০। তিনি বলেন, এসব ঘটনায় অপরাধীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে তারা স্থানীয় প্রশাসনকে প্রভাবিত করে ঘটনার পরবর্তী কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে সেই সব স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এমনকি মামলা চলাকালীন অবস্থায় অথবা আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সম্পত্তি দখলের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।