সংলাপের মাধ্যমে ‘আস্থাশীল ইসি’ গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি: বিএনপি

0
476
blank

ঢাকা: সংলাপের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিকদলের কাছে নিরপেক্ষ ও আস্থাশীল নির্বাচন কমিশন গঠনে উদ্যোগ নেবেন রাষ্ট্রপতি এমনটাই প্রত্যাশা করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির প্রত্যাশা হচ্ছে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন যা সরকারের খাঁচায় বন্দি পাখি হবে না। যা সত্যিকার অর্থে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হবে। যে কমিশন সরকারের রক্তচক্ষু উপক্ষো করে ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভোটারদের উৎসাহীত করবে। যা সমগ্র জাতি প্রত্যাশা করে, আর বিএনপি তারই প্রতিধ্বনি করেছে ১৩ দফা প্রস্তাবে। আমরা করবো সেই ধরনের নির্বাচন কমিশন, যে নির্বাচন কমিশনের প্রতি সকল দলের আস্থা থাকবে। তবে সেই আস্থা ব্যতিরেকে যদি রাষ্ট্রপতি বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী ও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে শুধুমাত্র শাসকদলের অনুগতদের খোঁজেন তাহলে কোনো আস্থাশীল ঘটনা হবে না।
রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির কাছে বিএনপির আলোচনার মূল ভিত্তি হবে ইসি গঠনে খালেদা জিয়ার দেয়া ১৩ দফা প্রস্তাব।
তিনি বলেন, সংকুচিত গণতন্ত্রের পরিসর বাড়ানোর জন্যই নাসিক নির্বাচনে বিএনপি’র অংশগ্রহণ। নারায়ণগঞ্জবাসী ভোটারবিহীন সরকারের ধারাবাহিক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ও মানুষের ভোটাধিকার হরণের জবাব দিতে প্রস্তুত হয়ে আছে। ৭৫’র একদলীয় বাকশালের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়ে বর্তমানে যে ভয়াবহ দুঃশাসন, দেশজুড়ে লুটপাটের মহৌৎসব, রাজকোষ লোপাটসহ বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ, গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ, কথা বলতে গেলেই মামলা-হামলা-কারানির্যাতন, নির্যাতন-নিপীড়ন, গুম, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ চলছে তার বিরুদ্ধে রায় দিতে জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ। হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দায়েরের মাধ্যমে বিরোধী দলের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে দমন-পীড়নের জবাব মিলবে আগামী নাসিক নির্বাচনে। অর্থাৎ দুঃশাসনের বিরদ্ধে জাতীয় ইস্যুর সকল ধরনের প্রভাব পড়বে আগামী নাসিক নির্বাচনে।
রিজভী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নাসিক নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেলেও সন্ত্রাসীরা তাদের সহিংস ভঙ্গি প্রদর্শনের নানা আলামত ফুটে উঠছে। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের মামলার বাদীকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিএনপি এর আগেও বৈধ অস্ত্র জমা এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোন তৎপরতা নেই। তাই নাসিক নির্বাচন কতটা অবাধ ও সুষ্ঠু হবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ভোটাররা যদি ভোটের দিন নির্বিঘ্নে, ভয়ভীতিমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে তাহলে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী লক্ষাধিক ভোটে বিজয়ী হবে।
নির্বাচন কমিশনের প্রতি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে তিনি বলেন, আমরা আবারো দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলতে চাই-এই নির্বাচন কমিশন তাদের অধীনে রক্তপাতের নির্বাচনের ন্যায় আগামী ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নাসিক নির্বাচন আলোহীন, ভোটহীন, ভোটারশূন্য ও অন্ধকারতুল্য প্রবণতার নির্বাচন সফল করার তৎপরতা চালালে সেটি প্রতিহত করার জন্য জনগণ দিবানিশি প্রস্তুত থাকবে। পাশাপাশি কমিশনের মূঢ়তার আত্মঘাতী কর্মকাণ্ডের উপযুক্ত জবাব পেতে কমিশনকে প্রস্তুত থাকতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার ভোট ডাকাতি ও কারচুপির আশ্রয় নিতে গেলে সেসময় কমিশন নিষ্ক্রিয়, নিদ্রামগ্ন ও সরকারের স্বার্থরক্ষায় তৎপর থাকলে সেটির প্রতিক্রিয়ার জন্যও নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, কাজী আবুল বাশার, বাবুল আহমেদ প্রমুখ।