সমুদ্রের ব্লক ইজারার চুক্তি প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ: আনু মুহাম্মদ

0
452
blank
blank

ঢাকা: তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ অভিযোগ করে বলেছেন, সমুদ্রের ব্লক ইজারা দেওয়ার চুক্তি প্রক্রিয়াটি অস্বচ্ছ। বিনা দরপত্রে গোপন সমঝোতার ভিত্তিতে করা এই চুক্তি ভুল নীতি ও দুর্নীতির ফল।
শনিবার বিকেলে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিলের আগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দায়মুক্তি আইন দিয়ে সকল অস্বচ্ছতা-দুর্নীতি-অনিয়ম জবাবদিহিতার উর্ধ্বে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই চুক্তি সই হবার কারণে অন্যান্য ব্লকগুলোতেও একই সুবিধা পাবার জন্য ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এধরনের চুক্তি করার চেষ্টা করবে। ফলে পুরো বঙ্গোপসাগরের সম্পদই দেশের মানুষের হাতছাড়া হবে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে বঙ্গোপসাগরের গ্যাস সম্পদ আগামী কয়েক দশকে প্রধান অবলম্বন হতে পারে। এই সম্পদ অনুসন্ধান, উত্তোলন ও ব্যবহারের যথাযথ নীতি গ্রহণ করলে তা দেশের স্বার্থে ব্যবহার নিশ্চিত করা যেত। গ্যাস সম্পদ ব্যবহার করে সুলভে, পরিবেশবান্ধব উপায়ে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানো ও উৎপাদনশীল খাতে ব্যাপক গতি আনা যেত। অথচ সরকার উল্টোযাত্রা করছে। বিদেশি কোম্পানির অংশীদারিত্ব বাড়িয়ে, রফতানিমুখী ধারা রেখে যে চুক্তি করা হচ্ছে তাতে এই গ্যাস সম্পদ দেশের কাজে লাগানো অনিশ্চিত হলো। এই চুক্তির কারণে দেশের ওপর আরো আর্থিক বোঝা বাড়বে। তিনি গ্যাস সম্পদের উপর শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত ও জাতীয় সক্ষমতা বাড়িয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমুদ্রের গ্যাস ব্লক অনুসন্ধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।
সমাবেশে সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, রফতানিমুখী তথাকথিত মডেল পিএসসির বিরুদ্ধে দেশবাসী হরতাল করে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অথচ নতুন করে এই পিএসসির আওতায় এই চুক্তি করা হলো। তিনি সরকারকে প্রশ্ন করে বলেন, সরকার প্রধান বিভিন্ন সময় বলেছেন একসময় গ্যাস রফতানির চুক্তি সই করে এক দল ক্ষমতায় এসেছে। তাহলে এখন কোন সুদূঢ় প্রসারী চুক্তির বদৌলতে সরকার এ ধরনের গণবিরোধী চুক্তি করছে। একথা দেশবাসী জানতে চায়।
সমাবেশে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণেই অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো হচ্ছে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম। পাশাপাশি গ্যাস সংকটের কথা বলে কয়লা আমদানি-নির্ভর সুন্দরবিনাশী রামপাল প্রকল্প করছে। কিছু দেশি ও বিদেশি গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করতেই এ কাজ করা হচ্ছে।
সমাবেশে রাজেকুজ্জামান রতন, জোনায়েদ সাকী, মোশরেফা মিশু, আজিজুর রহমান, মানস নন্দী, মাহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, শামসুল আলম, মীর মোফাজ্জেল মোস্তাক, জুলফিকার আলী, খান আসাদুজ্জামান মাসুম, মনিরউদ্দিন পাপ্পু প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়