সরকার ঝিনাইদহকে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে: জামায়াত

0
501
blank
blank

ঢাকা: ঝিনাইদহে আটক অবস্থায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের দুই নেতাকে ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বেছে বেছে নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে হত্যা করে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করছে।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ঝিনাইদহ পলিটেকনিক কলেজের ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আনিসুর রহমান ও ইসলামী ছাত্রশিবির নেতা শহীদ আল মাহমুদকে গত ১৩ জুন আটক করার পর থেকে পুলিশ গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করতে থাকে। কিন্তু ৩০ জুন দিবাগত রাত্রে পুলিশ তাদের নলডাংগা ইউনিয়নের তেতুল বাড়ীয়া গ্রামের উত্তরের মাঠে নিয়ে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শিবির নেতাদের বর্বরভাবে হত্যা করার পর পুলিশ এখন ভিত্তিহীন মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে যে, তারা তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।’

তিনি বলেন, এ ঘটনার নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা নেই। নিহতদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবার-পরিজন শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাদা পোশাকে মানুষকে ঘর-বাড়ী, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখে এবং তাদের গ্রেপ্তার করার কথা অস্বীকার করে আসছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যাদের আটক করা হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের উপর দিনের পর দিন অমানসিকভাবে অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। জুলুম নির্যাতন চালিয়ে আটক ব্যক্তিদের নিকট থেকে মিথ্যা জবানবন্দী আদায়ে ব্যর্থ হয়ে সরকারের নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশের আইন, সংবিধান ও মৌলিক নাগরিক অধিকার পদদলিত করে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে তাদের গুলি করে হত্যা করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে পূর্ব থেকে আটক নির্দিষ্ট ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউই হতাহত হয় না। এইভাবে নাটক সাজিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে ঝিনাইদহে ইসলামী ছাত্র শিবিরের দু’জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে সরকার ঝিনাইদহ জেলাকে একটি মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘এভাবে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীসহ বিরোধীদলের লোকদের নির্মমভাবে হত্যা করে সরকার দেশকে এক গভীর রাজনৈতিক সংকটের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে।’

তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে রাজনৈতিক হত্যা বন্ধ করার লক্ষ্যে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘এ ধরনের অন্যায়, অমানবিক ও বেআইনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের আজ হোক কাল হোক আইনের আওতায় যথোপযুক্ত শাস্তি ভোগ করতেই হবে।’

বিবৃতিতে পুলিশের গুলিতে নিহত আনিসুর রহমান ও শহীদ আল মাহমুদের শোক সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।