সরকার নিজেই এখন রাষ্ট্রদ্রোহী: খালেদা জিয়া

0
485
blank
blank

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এই সরকার গোপনে রাষ্ট্রের স্বার্থ পরিপন্থী অনেক কাজ করছে। এক ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, সরকার নিজেই রাষ্ট্রদ্রোহী। তারা অন্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দিয়ে বেড়ায়। তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গোপনে অনেক কিছু করছে, যেটা জনগণ জানেনা। দেশের স্বার্থ পরিপন্থী কাজ করছে তারা। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেত্রী বলেন, সামনে সুদিন আসবে। আসুন ঐক্যবদ্ধ হই।

বৃহস্পতিবার রমজানের দশম দিনে রাজধানীর লেডিস ক্লাবে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন খালেদা জিয়া। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সাঁড়াশি অভিযানের মাধ্যমে সরকার পুরো দেশকে কারাগার বানিয়েছে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, এখন পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে শুধু বিএনপির প্রায় দুই হাজার সাতশ’ জনের বেশি। গ্রেফতার হওয়াদের স্বজনরা কারাগারের সামনে আহাজারি করছে। কাজেই সরকারের লক্ষ্য, এই অভিযানে জঙ্গি সন্ত্রাসী ধরা নয়, বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরা। বিএনপিকে যারা ভালোবাসে সেইসব সমর্থকদের ধরা। তিনি বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের অপরাধ না থাকলেও তাদের গ্রেফতার করা হয়, কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের কেউ অপরাধ করলে তাদের ধরেও ছেড়ে দেওয়া হয়। ছাত্রলীগের একজন অস্ত্রসহ ধরা পড়েছে। তাকে জেলে নিয়েছে। আবার বেল (জামিন) নিয়ে বেরিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগের কেউ ধরা পড়লে লোক দেখানো জেলে নিয়ে পরে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়। আর বিএনপির লোকজন অপরাধ না করলেও তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। দিনের পর দিন কারাগারে রাখা হয়। জামিন দিলেও আবার জেলগেট থেকে নতুন মামলা দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। বেগম জিয়া বলেন, অতীতে বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির প্রার্থীরা জয়ের চিত্র দেখে পরবর্তী স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে জোর করে ভোট ডাকাতি করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে লুটপাট হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, কখনো দেখিনি ব্যাংক এভাবে লুট হয়। প্রত্যেকটি ব্যাংক, সেটি সরকারি অথবা বেসরকারি সব লুট হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ব্যাংক কখনো ডাকাতি হয়নি যেটা এই সরকারের আমলে হয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে এই সরকার খুনি, ব্যর্থ, অযোগ্য, অথর্ব দুর্নীতিবাজ, গুম, অত্যাচারী। নেতাকর্মী সহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আজকে উচিৎ দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। সব নেতাদের একই প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। কে ছোট, কে বড় সেটি বড় কথা নয়। বড় কথা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে দেশকে বাঁচানো, মানুষের কল্যাণ করা।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে শুভদিন আসবে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। ইফতারের মূল মঞ্চে খালেদা জিয়ার সাথে এলডিপির সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা এ টি এম আবদুল হালিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, পিপলস লীগের মহাসচিব অ্যাডভোকেট মাহবুব, মুসলিম লীগের সভাপতি এইচএম কামরুজ্জামান খান, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) মহাসচিব সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান পেশোয়ারী, সাম্যবাদী দলের মহাসচিব সাঈদ আহমেদ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন ইফতার করেন। বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন, সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ অংশ নেন। এ ছাড়া জোটের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদৎ হোসেন সেলিম, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল করিম, জাগপার মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব মো. আবুল কাশেম, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ অংশ নেন।