সাত বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে ১০১ জনের মৃত্যু

0
1050
blank
blank

ঢাকা: ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের মে পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ১০১ জনের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। রবিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান মূল প্রবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরেন।

নির্যাতনের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে এখন একটি সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে আদিলুর রহমান খান বলেন, নির্যাতনের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে দায়মুক্তির সংস্কৃতি চালু থাকা এবং নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩-এর বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে নির্যাতন ও অমানবিক আচরণের ঘটনাগুলো ঘটছে।

রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার দুর্বলতা একে আরও প্রকট করে তুলেছে বলেও তিনি জানান।

আলোচনা সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ এখন হত্যা, খুন, অপহরণ ও নির্যাতনের চারণভূমি। খুন এখন সরকারি-বেসরকারি উৎসব। যদি সন্ত্রাসীরা একটি খুন করে, তবে সরকার করে ১০টি।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির উদ্দেশে বলেন, যদি ক্ষমতায় আসতে চান, জনগণের ভালোবাসা পেতে চান, পরিষ্কারভাবে কথা বলতে হবে। অপারেশন ক্লিনহার্ট করে আপনারা যে ভুল করেছেন, সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যে র্যা ব বন্ধ করে দিতে হবে। যারা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ খেলাধুলায়, বিশেষ করে ক্রিকেটে যে উন্নতি করছে, নির্যাতনেও সেভাবে উন্নতি করছে। এখানে নির্যাতনের কত ফরম্যাট আছে, তা ভাবা যায় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ এখন নির্যাতনের স্বর্গরাজ্য। এখানে বিভিন্নভাবে নির্যাতন হয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলব, দয়া করে আপনাদের কণ্ঠ উচ্চকিত করুন।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকারের কতটা গণবিচ্ছিন্ন হলে তাকে নিপীড়ন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে। আইনজীবী, সুশীল সমাজ এবং কিছু কিছু সাংবাদিক যখন বলেন—ক্রসফায়ার বৈধ; তাহলে আপনি সংবিধান তুলে দিন, বিচারব্যবস্থা তুলে দিন।

অধিকারের সভাপতি সি আর আবরারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী সংস্থা-ওএমসিটির সাবেক মহাসচিব এরিক সটাস, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা নূর খান, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম প্রমুখ।

এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ ও মিরপুর বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী আকরাম আহমেদ তাদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের বর্ণনা দেন।