এনামুল হক জুবের: সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েও শান্তিতে নেই আরিফুল হক চৌধুরী। গত নির্বাচনে জয়লাভের পেছনে যাদের বড় অবদান ছিল সেই জামায়াত এবার নেই তার পাশে। তারা তাদের শক্তিশালী প্রার্থী, নগর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে নিয়ে ব্যস্ত। ২০ দলীয় জোটের সমর্থন না পেলেও জুবায়ের মাঠে থাকবেন এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন জামায়াতের এক কেন্দ্রীয় নেতা। সিলেটে জামায়াত ও বিএনপি কেউ কাউকে ছাড় দেবে নাÑ এটা এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট। অনড় অবস্থানের কারণে সিলেটের উভয় দলের বেশির ভাগ নেতা সমঝোতার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তবে কেউ কেউ এখনো আশাবাদী। এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জোরেশোরে প্রচারণা চালিয়ে গেলেও আরিফ নিজ দলের নেতাকর্মীদের মাঠে নামাতে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। প্রকাশ্যে বিরোধ দেখা না গেলেও সিলেটে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের মধ্যে রয়েছে বিভাজন। বিশেষ করে নতুন কমিটি ঘোষণার পর ছাত্রদলের বিরোধ লক্ষণীয়। সিসিকের গত নির্বাচনে দলীয় মেয়রপ্রার্থী আরিফের পক্ষে ছাত্রদল ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছিল। কিন্তু এবার ছাত্রদলের বিরোধ ভাবিয়ে তুলেছে বিএনপি নেতাদের। গত নির্বাচনে জয়লাভের পর নানা কারণে দলের নেতাকর্মীদের সাথে আরিফের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এই দূরত্বের কারণে মনোনয়নপ্রত্যাশী পাঁচ নেতার সবাই ছিলেন তার বিরুদ্ধে। তাদের অন্যতম নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, দল যে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে তার জবাব দেবে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সচেতন ভোটাররা। মাঠে সক্রিয় সেলিমকে বাগে আনার জন্য আরিফ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েও এখনো সফল হতে পারেননি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চলবে বলে জানালেন নগর বিএনপির এক নেতা। এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেন বলেন, এটা আমাদের ঘরের সমস্যা। সময় মতো সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বদরুজ্জামান সেলিম নয়া দিগন্তকে বলেন, কেন্দ্রের নেতা থেকে শুরু করে স্থানীয়পর্যায়ে অনেক নেতা আমার সাথে যোগাযোগ করেছেন। তারা আরিফের পক্ষে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য আমাকে অনুরোধ করেছেন। আমি সাফ জানিয়ে দিয়েছি, এটা কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, কেউ কেউ আরিফকে আমার বাসায় নিয়ে এসে সমঝোতার কথা জানালে আমি তাদের স্পষ্ট বলে দিয়েছি, এমন চেষ্টা করবেন না, তাকে নিয়ে এলে পরিস্থিতি অন্য রকম হবে। তিনি বলেন, ৮ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে আমি অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরব। এমনো হতে পারে শেষ পর্যন্ত ধানের শীষ প্রতীক আমি পেয়ে যাবো। আর না পেলে টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে লড়ব। আরিফুল হক চৌধুরী আশাবাদী, সেলিম শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন। গত বৃহস্পতিবার নগর বিএনপির কর্মিসভায় বদরুজ্জামান সেলিমের প্রশংসা করে আরিফ বলেন, বর্তমানে তিনি আবেগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। আমি আশা করি, নির্বাচনে তিনি আমার পাশে এসে দাঁড়াবেন। কিন্তু আরিফের এমন প্রত্যাশা নাকচ করে দিয়ে সেলিম বলেন, প্রশ্নই ওঠে না। মনোনয়ন জমা দিয়েছি প্রত্যাহারের জন্য নয়। প্রায় চার দশক ধরে রাজনীতির মাঠে যে শ্রম দিয়েছি সে শ্রম বৃথা যাবে না। কেন্দ্র চোখে চশমা পরে থাকলেও দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা আমাকে ভালোবাসে। তার প্রমাণ নির্বাচনের দিন হবে।
সূত্র: নয়াদিগন্ত
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.