সুনামগঞ্জে পাউবো’র দুর্নীতিতে দুদকের তদন্ত শুরু

0
791
blank
blank

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জে হাওর রক্ষা বাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দুর্নীতি ও অনিয়ম সরেজমিনে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিন সদস্যসের প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে দুদক টিমের সদস্যরা জেলার বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করেছেন। দুদকের পরিচালক মো. বেলাল হোসেনের নেতৃত্বে দুদকের উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহিম ও সহকারী পরিচালক সেলিনা আক্তার মনি এ তদন্ত টিমে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউজে দুদক পরিচালক মো. বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘হাওর রক্ষা বাঁধের কাজে দুর্নীতির তদন্ত চলছে। আমাদের দুদকের ইঞ্জিনিয়াররা আরও অধিকতর তদন্ত করবেন। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর যদি দেখা যায় যে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে তাহলে দ্রুত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরোও বলেছেন, ‘সম্পূর্ণ কাজ না করে আইনগতভাবে বিল (টাকা) তোলার কোনো সুযোগ নেই।’
দুদক নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করবে জানিয়ে বেলাল হোসেন বলেছেন, ‘আপনারা যদি তথ্য-প্রমাণ আমাদেরকে দেন তাহলে সেটিও আমরা কাজে লাগাতে পারব। আমরা আমাদের মতো করে কাজ করব।’
এ সময় আরোও উপস্থিত ছিলেন দুদকের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক শিরিন পারভিন, উপ-পরিচালক রেবা হালদার, উপ-সহকারী পরিচালক রনজিৎ কর্মকার।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবার জেলার ১১টি উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৭০ হেক্টর। কিন্তু চাষাবাদ হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৮২ হেক্টর জমি। যেখানে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, এবার জেলার ৪২টি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজের জন্য সরকার প্রায় ৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এর মধ্যে ২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা পিআইসিতে এবং ৪৮ কোটি টাকা ঠিকাদারদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড আরোও জানিয়েছে, জেলায় ২৩৮টি পিআইসি কমিটি এবং ৭৬টি কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো। পাউবো’র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, পিআইসি ও ঠিকাদারদের গাফিলতির কারণে অসময়ে হাওররক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করায় হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে ফসল তলিয়ে যায়।
সুনামগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাহেদুল হক জানিয়েছেন, জেলার ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯৭৪ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও কৃষকরা বলছে জেলার ৯০ ভাগ অর্থাৎ প্রায় ২ লাখ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ২৯ মার্চ থেকে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে পিআইসি’র হাওররক্ষা দুর্বল বাঁধ ভেঙ্গে একে একে জেলার প্রায় সবক’টি হাওরের কাচা বোরো ধান তলিয়ে যায়।