সুনামগঞ্জ জেলা আ’লীগ নেতাদের সাথে কেন্দ্রীয় সম্পাদকের বৈঠক রোববার

0
528
blank
blank

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠন করা হবে ? না সম্মলন ছাড়া কমিটি হবে? এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আগামী রোবরবার দলের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ আহমদের সাথে জেলা কমিটির সভাপতি, সাধারন সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের বৈঠক হবার কথা আছে। জেলা আওয়ামীলীগের দায়িত্বশীল এক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত বৃহস্প্রতিবার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান দলের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ আহমদের সাথে দেখা করে বলেছিলেন, জেলা সম্মেলন হচ্ছেনা নতুন কমিটি আসছে। তিনি জানিয়ে ছিলেন, কেন্দ্রীয় সম্মেলন হবার আগে দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা কমিটির সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে দলের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক নির্ধারন করবেন। পরবর্তিতে সুবিধা অনুযায়ী সময়ে নতুন দায়িত্ব প্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক মিলে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন। এ মাসেই জেলা কমিটি গঠন হবার সম্ভাবনার কথা প্রচার হওয়ায় দলের গুরুত্বপূর্ন পদ লাভের আশায় অনেক নেতা দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন।
জেলা কমিটি গঠন নিয়ে দলের সাধারন সম্পাদকের পদ প্রত্যাশি সুনামগঞ্জ জর্জকোটের পিপি এডভোকেট খাইরুল কবীর রুমেনের সাথে সুনামগঞ্জ প্রতিদন অনলাইনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। কমিটি আগে না সম্মেলন আগে চান? প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি ব্যপারটা নিয়ে এখনো গুরুত্ব দিয়ে ভাবছিনা। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের পুনঃমিলনে যোগ দিতে আমি বর্তমানে সেখানে অবস্থান করছি। তিনি বলেন, আমরা পূর্বের অবস্থানেই আছি। আমাদের কথা জেলার যে সকল থানা কমিটি নিয়ে বিরোধ আছে সুষ্ট সম্মেলনের মাধ্যমে সে গুলো শেষ করে সবাইকে নিয়ে জেলা সদরে একটি সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠন করা হোক। সুনামগঞ্জ জেলার সকল সাংসদ, জেলা পরিষদ প্রশাসক, পৌর মেয়র সহ সকল নেতাকর্মীরা সে ব্যাপারে ঐক্যবন্ধ ও একমত পোষন করেন। আমাদের দাবি যারা ত্যাগি ও যোগ্য তাদেরকে জেলা কমিটির দায়িত্ব প্রদান করা হোক।’
ঢাকায় বসে জেলা কমিটি হতে যাচ্ছে এ ব্যাপারে কি ভাবছেন ? জেলা আওয়ামীলীগের গুরুত্ব পূর্ন আরেক সিনিয়র নেতা করুনা সিন্ধু বাবুলকে জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, ১৮বছর ধরে দলের জেলা সম্মেলন হচ্ছেনা এ ব্যর্থতার দায়বার দলীয় নেতৃবৃন্দের। ক্ষোভ ও দুঃক্ষ নিয়ে তিনি বলেন, ব্যর্থতার এই দায়ভার থেকে মুক্ত হতে কেউকেউ সম্মেলন না করে নিজেদের পছন্দের মানুষ নিয়ে দায়সারা একটি কমিটি করতে চাচ্ছেন। এর গ্রহন যোগ্যতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেন। তিনি বলেন, যারা তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতকে ভয় পায় তারাই দলে সম্মেলন করতে ভয় পায়। তিনি দলের বিগত কার্যক্রম নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলেন। তিনি বলেন, দল চলছে মোবাইল ফোনে। ঢাকা থেকে বসে নেতারা অহী নাজিল করেন। কোন জাতীয় দিবসে সভা সমাবেশ করতে গেলে নেতাদের কাছ থেকে কোন নির্দেশ পাওয়া যায়না। সদ্য পালিত ১০ জানুয়ারী জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটা ও আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলীয় ভাবে পালন করতে পারিনি। করুনা সিন্ধু বাবুলের কথা থেকে এটা স্পষ্ট বেড়িয়ে এসেছে যে তিনি আগে কমিটি নয় সম্মেলন হওয়ার পক্ষপাতি। অপর দিকে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নূরুল হুদা মুকুট বলেছেন, সম্মেলনের আগে কোন কমিটি গঠন করার পক্ষে তার মত নেই। জেলা শহরে সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠন করা হোক তিনিও সেটা চান ।
উল্লেখ্য যে, ১৮ বছর আগে ৫১ সদস্যের যে জেলা কমিটি গঠিত হয়েছিল এরমধ্যে ১০ নেতা ইতিমধ্যে মারা গেছেন। কেউকেউ বিদেশে অবস্থান করছে। ৫১ জনের মাঝে আছেন বাকী ৩৬ জন। এই ৩৬ জনের অনেকেই আবার দলে নিস্ক্রিয়। জেলা আওয়ামীলীগ নেতাদের অনেকে সন্দেহ পোষন করছেন, দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন করার কথা বলেও বর্তমান কমিটি যেহেতু সম্মেলন করতে ব্যর্থ সেহেতু জেলা আওয়ামীলীগের নি্স্ক্রীয় রাজনীতিকে সক্রিয় করতে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হয়তো বর্তমান জেলা কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহবায়ক কমিটি গঠন করে দিতে পারেন অথবা সভাপতি সম্পাদক নিয়োগ দেয়াও বিচিত্র না।