সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবার বেহাল দশা

0
1702
blank
blank

কে.এম শহীদুল, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: ভোগান্তির চরম শীর্ষে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল চিকিৎসা সেবার নামে চলছে ডাক্তার ও ডায়াগনষ্ঠিক সেন্টার এর প্রতারণার দালালী ব্যবসা । জেলার একমাত্র ২৫০র্শয্যা এই হাসপাতালে প্রতিদিন শত শত রোগীরা আসে সরকারী চিকিৎসা নিতে তাদের মধ্যে গুরুত আহত গরীব রোগীদের উন্নত চিকিৎসার নামে সর্বশান্ত করে পকেট কালি করে রাখেন ডায়গনষ্ঠিক সেন্টারের মাধ্যমে মনোনীত ডাক্তার নামে কিছু দালাল পক্রিতির অসাধু ডাক্তাররা। পাশা পাশি সুনামগঞ্জ শহরে কিছু নামে বেনামে ডায়াগনষ্ঠিক সেন্টারের দালালদের কপ্পরে পরে প্রতি নিয়ত হয়রানীর শিকার হচ্ছে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে বিনামুল্যে চিকিৎসা নিতে আসা সহজ সরল গ্রাম্য রোগীরা ঘটনাটি ঘটছে বহুদিন যাবত।
যতই দিন যাচ্ছে দালারদের সংখ্যা ততই বাড়ছে।

দীর্ঘদিন অনুসন্ধানে ও সরেজমিনে ঘুরে জানাযায় প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল এর সামনে একদল সুনামগঞ্জ শহরের প্রত্যেকটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মনোনীত ডাক্তার এবং নারী/পুরুষ দালালরা ফাদঁ পেতে বসে থাকে। কখন রোগী আসে যখনই রোগী অসে তারা বুঝিয়ে সুজিয়ে তাদের মনোনীত ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার নামে পরিক্ষা নিরিক্ষা করার জন্য ।শহরের যে কোন ডায়গনষ্ঠিক সেন্টার সেখানেই গেলেই পকেট খালি হয়ে যায় রোগীদের ঔষধ কিনার টাকা থাকেনা । সাধরন জখম প্রাপ্ত রুগীদের থেকে চিকাৎসা নিতে আসা ভোগান্তির শিকার গৌরাং ইউনিয়নের মালেকা বানুর সাথে কথাবলে যানা যায় মালেকা বানু বলেন আমি আমার পোলারে হাত ভাঙ্গার ডাক্তার দেহাইতে আইছি হাসপাতাল একটা রিক্সার ডাইভার আমারে কয় হাসপাতালে হাত ভাঙ্গা ডাক্তার নাই আপনি উকিল পাড়া গিয়া ডাক্তার দেখাইন আমারে নিয়া গেছে একটা হাসপাতালে এইনও গিয়া আমার পোলারে দেহাইছি আমারঠাইতো ২৫শত টাহা রাখছে কাগজ ও রাখছে এক মাস হইছে আমার পোলার হাত বালা হইছে না হাত ভাঙ্গছে দেইকা রক্ত পরিক্ষা করাইছে। উজানী গাও থেকে আসা রফিক মিয়া বলেন টেস্ট করাইতে করাইতে জীবন নষ্ট ডাক্তারের কাছে আইলে কালি টেষ্ট আর টেষ্ট ৫শ টাহার ঔষধ দেয় আর ২/৩হাজার টাহার পরিক্ষা দেয় ডাক্তাররা। এভাবেই প্রত্যেক রোগীকে দুই/তিন হাজার টাকার পরিক্ষা নিরিক্ষা করে তারপর ঔষধ দেওয়া হয়।এমনি করে চলছে চিকিৎসার নামে দালাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের রমরমা ব্যাবসা। অন্য দিকে ভুগান্তির শিকার হচ্ছে গ্রামের সহজ সরল রোগী ও রোগীর সাথে আসা অভিবাবকরা। এ ব্যাপারে কয়েক জন নাম প্রকাশ না করার শর্তে রিক্স্রা চালকদের সাথে কথা বলে যানা যায় সুনামগঞ্জ শহরের প্রত্যেকটি ডায়গনষ্টিক সেন্টারের ৩/৪জন করে দালাল রয়েছে। তারা রোগী দিলে প্রত্যেক রোগী বাবদ ২/৩শত টাকা করে মুনাফা পায় দালালরা ১৫/১৬ জনের একটি সিন্ডিকেট দালাল চক্র কাজ করে সুনামগঞ্জ শহরে। মধ্যে কয়েকজন নারীরা যোগ দিয়েছেন এই দালালী ব্যবসায় । স্থানীয় ও জাতীয় পেপার পত্রিকায় রোগীদের ভুগান্তির অনেক প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে ও কোন প্রতিকার না থাকায় দিন দিন ওদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
এছাড়াও বর্তমানে সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন পদ শুণ্য থাকায় জরুরী বিভাগে দায়িত্বে থাকা ডাক্তাররা দালালদের সাথে পাল্লা দিয়ে নিজেরাও রুগীদের পরিক্ষা নিরিক্ষা করানোর জন্য নিজেদের মনোনীত ডায়গনষ্ঠিক সেন্টারের নামবলে পাঠিয়ে দেন এমন অভিযোগ রয়েছে অনেকের। খোজঁনিয়ে জানাযায় জরুরী বিভাগে কর্তর্ব্যরত কয়েকজন ডাক্তার সপ্তাহে ২একদিন আসেন বিভিন্ন উপজেলা স্বাথ্য কমপ্লেক্স থেকে এবং তাদের ধারা প্রতারণার শিকার হন রোগীরা। এছাড়াও দালালদের মধ্যে কাজ করে নুরুল ইসলাম ,কালা মিয়া, মিলন আহমেদ, মোহন ,আবুতাহের, রজব আলী , আবু কালাম ,তাজুল ইসলাম ,গোলাপ মিয়া, সুহেল মিয়া, হুমায়ুন মিয়া, শফিক মিয়া, জনমিয়াসহ-১৫/১৬জনএর একটি দালাল চক্র কাজ করে। যার ফলে ভুল চিকিৎসার সমুখীন হচ্ছেন সুনামগঞ্জ জেলার অসহায় সহজ সরল বিনামুল্যে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর সাথে আসা অভিবাবকরা। অন্যদিকে ফায়দা লুটছে ডাক্তার নামে কিছু অসাদু চিকিৎসকরা ও নামে বেনামে শহরের ডায়গনষ্ঠিক সেন্টারগুলি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যখন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা,সাজা প্রদান করেন তখনই যানা যায় অনুমোদনহীন সেন্টার ও ভুয়া ডাক্তারের খবর। দালাল চক্র ও অনুমোদনহীন ডায়গনষ্টিক সেন্টার এবং ভুয়া ডাক্তার সহ লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসী গুলিকে খুঁজে ওদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিবেন প্রসাশন এমনটাই প্রত্যাশা করে সুশীল সামাজ ও ভুক্তভুগী সুনামগঞ্জ বাসী। দালালদের হাত থেকে রোগীদের ভূগান্তি কবে শেষ হবে সেটাই এখন ভাবনার বিষয়? নাম প্রকাশ না করার শর্তে দালাল চক্রের কয়েকজনের সাথে আলাপ করলে তারা বলেন আমাদের কিদোষ ডাক্তাররা নিজেরাই পেডে লিখে দেন পরিক্ষা নিরিক্ষার কথা এবং তারাই বলেদেন রোগীরা কোন ডায়গনষ্ঠিক সেন্টারে যাইত আমাদের যে সেন্টারে রোগীরা বলে আমরা রিক্সা দিয়ে সেখানেই নিয়ে যাই। দালালী করে ডাক্তাররা আমাদের দোষ না দিয়ে ডাক্তারদের জিজ্ঞাসা করুন। এভাবেই চিকিৎসার নামে চলছে কিছু অসাধু ডাক্তার ও দালালদের দিয়ে ডায়গনষ্ঠিক সেন্টারের রমরমা ব্যবসা।
এব্যাপারে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ সদর হাতপাতালের সিভিলসার্জন কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা ডাক্তার বিশ্বজিৎ গোলজার তিনি জানান দালালদের ব্যাপারে আমার কিছু জানানেই যদি এরকম অভিযোগ পাওয়া যায় তাদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে কোন ডাক্তার যদি চিকিৎসার নামে কোন ডায়গনষ্ঠিক সেন্টারের নাম বলেদেন রোগীদের কাছে তাহলে সাথে সাথে কর্তৃপক্ষকে জানালে ঐ ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এব্যাপারে সদর হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার রফিকুল ইসলাম জানান কেউ যাতে কোন দালালদের প্রতারণার শিকার না হন তার জন্য হাসপাতালের দেয়ালে নির্দেশনার জন্য শতর্ক বানী টাঙ্গিয়ে রাখা হয়েছে। এবং কোন ডাক্তার যদি কোন অনিয়ম করেন তাহলে কতৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।