স্বাধীতার বাণীটা আগেই প্রস্তুত করা ছিল: প্রধানমন্ত্রী

0
454
blank

ঢাকা: ১৯৭১ সালের মার্চে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যে ঘোষণা দেওয়া হয়, সেটি আগেই থেকে প্রস্তুত করা ছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ২৫শে মার্চ যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজারবাগ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, তার আগেই আমাদের কাছে একটা খবর আসল। স্বাধীতার বাণীটা আগেই প্রস্তুত করা ছিল। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনিস্টিটিউট মিলনায়তনে শুক্রবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তৃতাকালে এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭১ সালের সেই কালো রাত্রির ঘটনা স্মরণ করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা আরো জানিয়েছেন, সেদিন ৩২ নম্বরে বাসার লাইব্রেরির পাশে বারান্দায় যাওয়ার দরজার পাশে রাখা টেবিলের ওপর থাকা টেলিফোন থেকে ম্যাসেজটা (স্বাধীনতার বাণী) তিনি (বঙ্গবন্ধু) ইপিআর ফাঁড়িতে দিয়ে দেন। ওখানে শওকত সাহেবসহ (শহীদ সুবেদার মেজর শওকত আলী) চারজন বসেছিলেন। তারা অপেক্ষায় ছিলেন। যখনই আক্রমণ করবে এই ম্যাসেজটা তারা পৌঁছে দেবেন সমস্ত জায়গায়… ওয়্যারলেস, টেলিগ্রাম, টেলিপ্রিন্টারের মাধ্যমে তা সমস্ত বাংলাদেশে তা পৌঁছে যাবে।
বাঙালির সংগ্রামের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু সত্তরের নির্বাচনের মাধ্যমে সেই ঘোষণা দেওয়ার ‘ম্যান্ডেট’ নিয়ে নিয়েছিলেন বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) জনমত নিয়ে নিয়েছিলেন। ওই নির্বাচন করার আগে যারা নির্বাচনে বাধা দিতেন, একটা কথাই তাদের তিনি বলতেন- ‘বাংলাদেশের নেতা কে, এটা জনগণই সিদ্ধান্ত নিয়ে দিক। জনগণই বলে দিক।’ জনগণের যে ম্যান্ডেট, জনগণের যে মতামত, জনগণের যে অনুমোদন; তার একান্ত প্রয়োজন ছিল।
বঙ্গবন্ধুকন্যা আরো বলেছেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেটটা একমাত্র ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। স্বাধীনতার ঘোষণা কেবল তিনিই দিতে পারেন। সে অধিকার তারই ছিল। তার প্রত্যেকটা পদক্ষেপ অত্যন্ত সুচিন্তিত ছিল বলেই আমরা যুদ্ধ করে দেশের বিজয় অর্জন করতে পেরেছিলাম।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত প্রস্তুতি বঙ্গবন্ধু আগেই নিয়ে রেখেছিলেন। তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হলে যুদ্ধ যে চলতে থাকবে, সেটা তিনি জানতেন। ধরেই নিয়েছিলেন, তাকে মেরে ফেলে দেবে। তার অবর্তমানে সব কিছু যেন চলে, তিনি সে ব্যবস্থাও করে রেখে গিয়েছিলেন।
‘বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ: রাষ্ট্র ও সমাজ কাঠামো পরিবর্তনের দিকদর্শন’শীর্ষক এই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা এবং সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন। এ ছাড়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাশুরা হোসেন সেমিনারে বক্তব্য দেন।