স্বাধীন নিরপেক্ষ ও দক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছে ইইউ

0
464
blank

ঢাকা: সব দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একটি স্বাধীন, দলনিরপেক্ষ ও দক্ষ নির্বাচন কমিশনের গঠনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ব্রাসেলসে গত মঙ্গলবার ইইউ-বাংলাদেশ সহযোগিতা চুক্তির আওতায় সুশাসন ও মানবাধিকার বিষয়ক সাব-গ্রুপের বৈঠক থেকে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদুল হক বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানবিষয়ক আঞ্চলিক বিভাগের প্রধান ভেরোনিকা কোডি ইইউ’র পক্ষে নেতৃত্ব দেন। বৈঠকের আগে ইইউ নাগরিক সমাজ ও এনজিওগুলোর সাথে মতবিনিময় করেছে।
উল্লেখ্য বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২০১২ সালে গঠিত হয়। এর মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হবে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে মতামত নেয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক শুরু করেছেন। এর পর তিনি একটি সার্চ কমিটি গঠন করে নতুন নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিতে পারেন। বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনই বর্তমান ইসির অধীনে শেষ নির্বাচন।
ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উভয় পক্ষ সহযোগিতা চুক্তি অনুযায়ী মানবাধিকারকে ইইউ-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করেছে। ইইউ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, মৃত্যুদণ্ড, সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিক সমাজের জন্য সঙ্কুচিত সুযোগের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ব্রাসেলস থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গঠনমূলক চেতনায় অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি ইস্যুতে বৈঠকে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আইনের শাসন ও প্রয়োগ, জাতিসঙ্ঘের আওতায় মানবাধিকার বিষয়ক সহযোগিতা, সংখ্যালঘুদের অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা, মৃত্যুদণ্ড, রোহিঙ্গা সঙ্কট, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, নারী ও শিশু অধিকার, মৌলিক শ্রম অধিকার, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন ও সুষ্ঠু শ্রম ব্যবস্থাপনা। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জাতিসঙ্ঘের প্রতিনিধিকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানানো জন্য বাংলাদেশকে উৎসাহিত করেছে ইইউ।
সংগঠন করার স্বাধীনতা ইস্যুতে ইইউ বলেছে, বাংলাদেশকে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে মৌলিক শ্রম অধিকার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নকর্মী ও নেতাদের বিরুদ্ধে সহিংস আচরণ ও হয়রানি বন্ধসহ এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইইউ।
মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাদের আশ্রয় ও নিরাপত্তা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ জানিয়েছে ইইউ। বৈঠকে ইইউ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অবস্থা, শিশুশ্রম ও পারিবারিক সহিংসতার বিষয়ও উত্থাপন করেছে।