ঢাকা: সিমলা চুক্তি অনুযায়ী ১৯৫ জন চিহ্নিত পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীসহ সব যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। এমনকি পাকিস্তান তাদের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করলে এদের বিচারে সরকারকে আন্তার্জাতিক আদালতে যাওয়ারও দাবি জানিয়েছে ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার’ কমিটি। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার কমিটি এক সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি উত্থাপন করে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিটির আহ্বায়ক নৌ-মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘আগামী ২৬ মার্চ ১৯৫ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর প্রতীকী বিচারের আয়োজন চলছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার সামনে এ বিচার হবে।’
শাজাহান খান বলেন, ‘১৯৭১ সালে নরঘাতক ১৯৫ পাকিস্তানি সেনার বিচারের অঙ্গীকার করে ফিরিয়ে নেয় দেশটি। সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টিতে জনমত গড়া কমিটির প্রধান লক্ষ্য।’
গণবিচারের আগে আগামী ১৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় হবে বলেও জানান তিনি। এরপর ৩ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় মতিঝিলে শাপলা চত্বরে সমাবেশ ও সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল হবে।
এ ছাড়া ৬ জানুয়ারি সকাল ১০টায় যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আদেশ বহাল ও কার্যকরের দাবিতে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সিমলায় যে চুক্তি হয়েছিল তার মূল কথা ছিল স্ব স্ব দেশ চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। সে আলোকে বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন প্রণয়ন ও আদালত গঠন করে।
চুক্তি অনুসারে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত ৯০ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যের মধ্যে চিহ্নিত ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দায়িত্ব পাকিস্তান সরকারের ওপর অর্পিত হলেও তারা আজও তা না করে সিমলা চুক্তি ভঙ্গ করছে বলেও সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে আমরা ঐক্যবদ্ধ’ শ্লোগানে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে কমিটির আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি পর্যায়ক্রমে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আবেদ খান।
প্রতীকী বিচার প্রক্রিয়া কিভাবে সম্পন্ন হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আবেদ খান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বর্তমানে দেশের সবার প্রাণের দাবি। কমিটির পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে আন্দোলন চালিয়ে নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী শমি কায়সার বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যারা পরিবারের আপন মানুষদের হারিয়েছে, তাদের মনে চূড়ান্ত শান্তি আসবে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার হলে। তিনি বলেন, দেশের যত যুদ্ধাপরাধী রয়েছে, তাদের বিচার তো হচ্ছেই। দেশের বাইরের সব চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীরও বিচার হতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিটির অন্যান্য সদস্যের মধ্যে এস এ লতিফ এমপি, শিরীন আক্তার এমপি, মো. আলাউদ্দিন মিয়া, ওসমান আলী, মো. কামাল উদ্দিন, মো. সালাহ উদ্দিন, হাবিবুর রহমান আকন্দ, কামাল পাশা চৌধুরী, অঞ্জন রায়, নাট্য ব্যক্তিত্ব রোকেয়া প্রাচী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.