৬৪ জেলায় একযোগে মানববন্ধন প্রাথমিক শিক্ষকদের

0
1076
blank

বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে দেশের ৬৪ জেলায় একযোগে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকালে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এর আগে ইস্যুটি নিয়ে সহকারী শিক্ষকরা বিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। তবে একযোগে কর্মসূচি এই প্রথম পালিত হলো।

এদিন বিকেল ৩ টা থেকে দেশের সকল পিটিআই ও বিভিন্ন জেলার সমন্বয় রেখে মহানগর ও সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষকবৃন্দ এবং পিটিআই’র প্রশিক্ষণার্থীবৃন্দ নিজ নিজ উপজেলার প্রতিনিধি হিসেবে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এবং ডিপিইও’র মাধ্যমে প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। বিষয়টি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস’কে নিশ্চিত করেছেন শিক্ষকদের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাপ্রাবিসশিস সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ। ঢাকাসহ রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রামের জেলা ও উপজেলায় এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানের এই জেলাতেও মানববন্ধন করেছেন প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষকরা। এর মধ্যে কমলনগরে উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আবদুস সহিদ, সদস্য সচিব মাকছুদুর রহমান, চরফলকন মাওলানাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, হাজিরহাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শরীফ উদ্দিন, মো. ইব্রাহীম, চরফলকন জাজিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আহাম্মদ মোস্তফা ও পশ্চিম চরজাঙ্গালীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বিরেশ্বর চক্রবর্তীসহ বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশ নেন। মানববন্ধন থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেলের সাথে সঙ্গতি রেখে সহকারি শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে নির্ধারণের দাবি জানানো হয়।

এর আগে দ্যা ক্যাম্পাসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শিক্ষক নেতারা জানিয়েছিলেন, বুধবার জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৯ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সারাদেশের শিক্ষকদের প্রত্যাশা ছিল, ওই দিনই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সহকারী শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য সুরাহার বিষয়ে কথা বলবেন। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে মূল বক্তৃতার বাইরেও কারো সাথে আলোচনা হয়নি বলে দাবি শিক্ষক নেতাদের একটি সূত্রের। মূলত এ কারণেই সহকারী শিক্ষকরা আশাহত হয়েছেন। তাদের ভাষ্য, আন্দোলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান শিক্ষকরা। এ কারণেই পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দাবি আদায় না হলে বিক্ষোভ সমাবেশ, অনশন কর্মসূচি কিংবা ঢাকায় মহাসমাবেশ করার পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।

সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি অনুমোদিত সদ্য খসড়া বিধিমালায় প্রধান শিক্ষকদের জন্য দশম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড প্রদানের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে মাঠে নামেন শিক্ষকরা। যা প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরে অব্যাহত রয়েছে। মানববন্ধনের মাধ্যমে তারা বলছেন, গত পে-স্কেল থেকে সহকারী শিক্ষকরা চারটি গ্রেডের বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্যতার ভিত্তিতে বৈষম্য নিরসনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি।

তাদের ভাষ্য, প্রধান শিক্ষকের পরেই তাদের বেতন রাখার দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু তা না করেই হঠাৎ করেই এই খসড়া অনুমোদন দেয়ায় ফের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। শুধু তাই নয়, বিষয়টি আত্মসম্মানের বলেও দাবি তাদের।