এবার ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব বরখাস্ত

0
506

Anil gosami
নিউজ ডেস্ক: পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংয়ের পর এবার ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব অনীল গোস্বামীকেও বরখাস্ত করলো সেদেশের কেন্দ্রীয় সরকার। খবর জি-নিউজ। পশ্চিমবঙ্গের সারদা কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাতঙ্গ সিং এর গ্রেফতার ঠেকাতে সিবিআই কর্মকর্তাদের কাছে ফোনে তদবির করার অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
ভারতীয় সম্প্রচার মাধ্যমগুলো বুধবার রাতে সরকারি ঘোষণার বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, অনীল গোস্বামী কেন্দ্রীয় তদন্তসংস্থা সিবিআইকে ফোন করার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে দিল্লির নর্থ ব্লকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন অনিল গোস্বামী। সেই বৈঠকেই তিনি সিবিআইয়ের সঙ্গে কথা বলার কথা স্বীকার করেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অভিযোগ যাওয়ার আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে ব্রিফ করেন। তারপর দু’জনেই কংগ্রেস সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়া স্বরাষ্ট্র সচিবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ব্যাপারে একমত হন। অনিল গোস্বামীকে বরখাস্তের পর এল সি গোয়েলকে নয়া স্বরাষ্ট্র সচিব নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি ১৯৭৭ সালের কেরালা ব্যাচের আইএস ক্যাডার ছিলেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী জুলাইয়ে অনিল গোস্বামীর চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তার আগেই ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তাকে সরিয়ে দিলো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, নব্বইয়ের দশকে নরসিংহ রাও সরকারের প্রতিমন্ত্রী মাতঙ্গ সিং গত ৩১ জানুয়ারি কলকাতা থেকে গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে চ্যানেল খোলার জন্য সারদা গ্রুপের চেয়ারম্যান সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে ২৮ কোটি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যদিও, সেই চ্যানেল এখনোও খোলা হয়নি।

এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি (বুধবার) রাতে সাত মাস চাকরি থাকতেই ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংকে বরখাস্ত করে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। সুজাতা সিংয়ের স্থলাভিষিক্ত হন আমেরিকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর।

পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে আলোচিত সারদা কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত কুনাল ঘোষ। ২০১৩ সালে পতন ঘটার আগে সারদা গ্রুপ এমএলএম পদ্ধতিতে ১৭ লাখ সদস্যের কাছ থেকে প্রায় ৩০ হাজার কোটি রুপি সংগ্রহ করেছিল সারদা কেলেঙ্কারির মূল নায়ক সুদীপ্ত সেন। তিনিও কারাগারে।

সারদার প্রতারণামূলক এমএলএম ব্যবসায় যারা অঢেল অর্থের মালিক হয়েছেন কুনাল তাদের একজন। এই কেলেঙ্কারির নাটের গুরু সুদীপ্ত সেন নিজেই সিবিআইয়ের কাছে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, এই প্রতারণামূলক ব্যবসা এতদূর টেনে আনতে সাহায্য করেছেন তৃণমূল সংসদ সদস্য কুনাল ঘোষ। কয়েকজন ক্ষমতাধর রাজনীতিককে এর মধ্যে জড়াতেও কুনাল সাহায্য করেছেন।

২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই কুনাল অভিযোগ করছিলেন, সারদা-কাণ্ডে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক নেতা-মন্ত্রী জড়িত। সিবিআই তাদের কাউকে ধরছে না। এই প্রসঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়সহ আরো কয়েকজন বাঘা বাঘা রাজনীতিকের নাম উল্লেখ করে শাসকদলকে বিপাকে ফেলেন।