ঢাকা: সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেলের কারণে ওই এলাকার জলজ ও পরিবেশগত ক্ষতি নিরুপণে ঢাকা থেকে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ দল সুন্দরবনে গেছে। এদিকে, পানিতে ভেসে থাকা তেলের কার্যকারিতা নষ্ট করতে নদীতে জাহাজ দিয়ে স্প্রে করার বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য পেছানো হয়েছে। এর আগে, সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেল বালতিসহ বিভিন্ন পাত্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করার জন্য আশে-পাশের গ্রামগুলোর মানুষ এবং জেলেদের প্রতি আহবান জানানো হয়।
স্থানীয় প্রশাসন বলেছে, এই সংগ্রহ করা তেল রাষ্ট্রীয় একটি তেল সংস্থা প্রতি লিটার ৩০ টাকা করে কিনবে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, স্থানীয় লোকেদের সাহায্যে পুরনো এই পদ্ধতিতে তেল যতটা সরানো সম্ভব হবে, তারপর বাকি তেলের কার্যকারিতা নষ্ট করতে নদীতে জাহাজ দিয়ে স্প্রে করা হবে।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, ডুবে যাওয়া ট্যাংকারটিকে তিনদিন পর উদ্ধার করা হলেও নদীতে ৬০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তেল ছড়িয়ে থাকার বিষয়টিই ডলফিনসহ জলজ প্রাণী এবং সুন্দরবনের জন্য বড় সমস্যা হয়ে রয়েছে।
ঘটনার তিন দিনের মাথায় তেল ট্যাংকারটিকে উদ্ধার করে নদীর তীরে নেয়া হয়েছে। কিন্তু ট্যাংকারে থাকা সাড়ে তিন লাখ লিটার তেলের সবই শ্যালা নদীতে এবং সুন্দরবনের খালগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে বলে কর্মকর্তারা বলেছেন। শেষপর্যন্ত এখন গ্রামবাসী এবং জেলেদের উদ্বুদ্ধ করে নদী থেকে তেল সরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন, বনবিভাগ এবং নৌবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাগুলোর বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত এসেছে।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ বলেছেন, গ্রামবাসী এবং জেলেরা নদী থেকে যে তেল সংগ্রহ করবে, তা রাষ্ট্রীয় কোম্পানি পদ্মা অয়েল প্রতি লিটার ৩০ টাকা করে কিনবে। মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা মাইকিং করেছি এবং মানুষ ব্যাপক সাড়া দিয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রফিকুল ইসলাম দাবি করেছেন, এর আগেও বেশ কয়েকটি ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে দিয়ে তেল সংগ্রহের পুরনো পদ্ধতিই সাফল্য দিয়েছে।
নদীতে স্প্রে করে তেলের কার্যকারিতা নষ্ট করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাণ্ডারি নামের একটি জাহাজ ঘটনাস্থলে গেছে।
কিন্তু স্প্রে করলে ডলফিনসহ জলজ প্রাণীর ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা থাকে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অবশেষে পরিবেশ অধিদফতর স্প্রে করার অনুমতি দিয়েছে।
এই অধিদফতরের খুলনা অঞ্চলের পরিচালক ড: মো: মল্লিক বলেছেন, স্প্রে করা হলে ক্ষতি হবে না, এটা নিশ্চিত হওয়ার পরই অনুমতি দেয়া হয়েছে। এখন শুক্রবার স্প্রে করা হতে পারে।
বনবিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, ৬০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তেল ছড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু নদী থেকে তেল সরানোর সিদ্ধান্ত নিতে তিন দিন সময় লেগে গেল।