ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে দুর্নীতি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৯ জানুয়ারি দিন ধার্য্য করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশিবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের বিশেষ জজ আদালত-৩- এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এ দিন ধার্য্য করেন। আজ মামলার বাদী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা হারুন-অর রশীদ এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
খালেদা জিয়া গুলশানে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তার পক্ষে সময় আবেদন ও সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করার আবেদন করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবা।
আদালত ব্যক্তিগত হাজিরার ক্ষেত্রে সময় মঞ্জুর করলেও সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবির আবেদন নাকচ করে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদালত।
এ নিয়ে আদালতে হট্টগোল হয়। এক পর্যায়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বিচারপতির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে মামলা অন্যত্র স্থানান্তরের আবেদন করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গত ৭ জানুয়ারি এই আদালতে খালেদার অনুপস্থিতিতে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
তার চার দিন আগে গত ৩ জানুয়ারি রাত থেকে গুলশানে নিজের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া।
গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া এতিমখানা ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে এ দুই মামলার বিচার শুরু হয়।
উল্লেখ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে। এজাহারে বলা হয়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানম নামে এক মহিলার কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’র নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়।
তবে জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত ১ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেয়া হয়েছে, যা কাগজপত্রে উল্লেখ করা হয়। এই টাকার বৈধ কোন উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।
এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ খান।
অন্যদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১০ সালের ৫ আগস্ট বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। অভিযোগপত্র দেয়ার পর ২৬টি ধার্য তারিখ পার হলেও আইনি মারপ্যাঁচে খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি।
সবশেষ এ মামলায় খালেদা জিয়া গত বছরের ১১ অক্টোবর আদালতে হাজিরা দেন। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে এ মামলাটি দায়ের করে। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৩৬ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।