ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিকল্প ধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘গোপন কথা রইল না গোপন, ইমাম সাহেব বলে দিয়েছেন।’ জাতীয় প্রেস ক্লাব কনফারেন্স লাউঞ্জে রবিবার দুপুরে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে জিয়া পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে সঠিক নির্বাচন দিন। জনগণের প্রত্যাশা একটি সহনশীল গণতন্ত্র। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ীদের সঙ্গে সংসদে বসে আলোচনা করা যাবে। জনগণের কাছে যা কিছু মঙ্গল তাই কাম্য।’
সরকারের মন্ত্রীরা একেকজন বিচিত্র ধরনের চিড়িয়া- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য এ বছরের সর্ব নিকৃষ্ট উক্তি। ঘুষ নেওয়া দোষের নয় তিনি এ ধরনের মন্তব্য করে জঘন্য অন্যায় করেছেন। কিছুদিন পর দেখা যাবে তিনি বার্ষিক বাজেট পাসের সময় ঘুষের বাজেটও পেশ করবেন।’
সমাজ কল্যাণমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে আরেকজন তো আছেন নিদ্রামন্ত্রী। তিনি মিটিং এ কিভাবে ঘুমায়। এভাবে যদি রাষ্ট্রের কর্তারা ঘুমায় তবে রাষ্ট্রের কী অবস্থা হবে?’
তিনি বলেন, ‘সরকারের মধ্যে নানান প্রজাতির মন্ত্রীদের মাধ্যমে বিচিত্র এ মন্ত্রীসভা এখন চিড়িয়াখানায় পরিণত হয়েছে।’
এ সময় তিনি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক মন্ত্রী হাসান মাহমুদসহ অনেক মন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন।
রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের বিয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একজন মন্ত্রী ৬৭ বছর বয়সে বিয়ে করলেন, আমি এর বিরুদ্ধে নই। এ জন্য এতো পাবলিসিটি কেন? এই গায়ে হলুদ, এই বিয়ের অনুষ্ঠান, একটি ছবিও নাকি বানানো হবে!’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘দয়া করে আপনারা কেউ জয়কে নিয়ে কথা বলবেন না। ভাল বাংলাও বলতে পারে না। তাকে বলতে দিন। আশার কথা শুনাবে। সে লার্নিং প্রসেসে আছে। সে বাংলাদেশে ছিল না। বিদেশে থেকেছে এমনকি বিয়েও করেছে বিদেশীনীকে। তাই সে অনেক কিছুই জানে না। তাকে শিখতে দিন, জানতে দিন। তাকে নিয়ে কেউ মন্তব্য করবেন না।’
লতিফ সিদ্দিকীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, ‘যে দেশে প্রধানমন্ত্রীর নামে ফেসবুকে কিছু বললে মানহানি হয়। জেলে যেতে হয়, শাস্তি পেতে হয়। সে দেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার পরেও লতিফ সিদ্দিকীর কেন শাস্তি হবে না। বিভিন্ন জায়গায় তার শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। হয়তো এমপি থাকবে না। আরও শাস্তি হউক। তার নামে মামলা হয়েছে কিনা তা জনগণ জানতে চায়।’
‘বিশ দল বিষফোড়া’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিকল্পধারার প্রধান বলেন, ‘আপনি জেনে না জেনে ২০ দলকে ভয় করছেন। নয়তো এতো কথা বলছেন কেন। হয়তো তারা সত্য কথা বলছে নয় তো নিশ্চয়ই জনগণের সমর্থন রয়েছে। যার কারণে আপনার এতো ভয়।’
বি চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ভেতর দিয়ে যে রাজনীতি শুরু হয়েছে। তার চেয়ে বড় রাজনীতিক আর কেউ হতে পারে না। সে জিয়াউর রহমান। তার মূল দর্শন হারিয়ে গেছে। অগণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় যা হওয়ার তাই হচ্ছে।’
সংঠনের চেয়ারম্যান কবীর মুরাদের সভাপতি আরও বক্তব্য দেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ সংগঠনের নেতারা।