Home জাতীয় তরুণ প্রজন্মকে দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

তরুণ প্রজন্মকে দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

486
0

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ভালবাসার পাশাপাশি দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘নিজের জীবনকে যেমন সুন্দরভাবে গড়ে তুলবে, পাশাপাশি এ দেশকেও গড়ে তুলবে। এ চিন্ত-চেতনা যেন সব সময় তোমাদের মাঝে থাকে।’

বুধবার গণভবনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘দেশব্যাপী সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০১৯’ কার্যক্রমে জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচিত ১২ সেরা মেধাবীকে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা হচ্ছে এক ধরনের আলো। যা মানুষকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেয়। সে আলো থেকে যেন এ দেশের কোনো ছেলেমেয়ে বঞ্চিত না হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর এ লক্ষ্য পূরণে নানা নীতিমালাও আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’

বর্তমান যুগকে বিজ্ঞানের যুগ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞান চর্চা এবং গবেষণা ছাড়া আজকের দিনে কোনো কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের মূলে রয়েছে আমাদের গবেষণার ফল।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের বিজয়ের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগের ইতিহাস থেকে এক সময় বাঙালি জাতি সম্পূর্ণ বঞ্চিত ছিল। সে সময় বিকৃত ইতিহাস শেখানো হতো। আর বিকৃত বা মিথ্যা ইতিহাস দিয়ে যার শিক্ষা জীবন শুরু হয় তার জীনটাই মিথ্যা হয়ে যায়। সেজন্য এ বিষয়গুলোকে সব চেয়ে গুরুত্ব দিয়ে আমরা মেধা অন্বেষণের একটা উদ্যোগ নিয়ে পুরস্কারের ব্যবস্থা করলাম।’

অনন্য সাধারণ মেধা অন্বেষণের লক্ষ্যে ও শিক্ষা ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের বৈষম্য নিরসনে ও শিক্ষার্থীদের মাঝে দৃঢ় আস্থা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১৩ সাল থেকে প্রতি বছর সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হচ্ছে। ভাষা ও সাহিত্য, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, গণিত ও কম্পিউটার এবং বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ- এ ৪টি ক্যাটাগরিতে ২০১৯ সালের সেরা মেধাবী ১২ শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে পুরস্কারস্বরূপ সনদপত্র, মেডেল এবং এক লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয় অনুষ্ঠানে।

পুরস্কার বিজয়ীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তোমরা আজকে যারা পুরস্কার পেয়েছ তোমরাই আমাদের ভবিষ্যৎ, তোমরাই এ দেশকে একদিন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবে।’ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সোহরাব হোসেইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পুরস্কার বিজয়ী মেধাবী শিক্ষার্থীদের পক্ষে ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারশিয়া নাওয়ার নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে।

উচ্চ মাধ্যমিকের ফল যথেষ্ট ভালো হয়েছে : এদিন গণভবনে এ বছর ২০১৯-এর এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষায় ৭৩ দশমিক ৯৩ ভাগ পাস করেছে। এটা যথেষ্ট ভালো এবং গ্রহণযোগ্য ফল। শিক্ষার্থীরা আরও মনোযোগী হলে তারা আরও ভালো ফল করতে পারবে, সেটা আমার বিশ্বাস।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় মাত্র ৫৫ দিনে ফল প্রকাশ করায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। ছাত্রীদের পাসের হার বেশি হওয়ায় জেন্ডার সমতার কথাটি স্মরণ করিয়ে ছাত্রদেরও পাসের হার বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের পাসের হারটা বাড়তে হবে, যাতে জেন্ডার সমতাটা এসে যায়।’

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের সার-সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডসহ ১০টি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় এ বছর ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৯ লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ জন কৃতকার্য হয়। সম্মিলিত পাসের হার হচ্ছে ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এর মধ্যে ৪৭ হাজার ২৮৬ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, একটা সমাজকে উন্নত করতে হলে, একটি দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে হলে শিক্ষাটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। একটি শিক্ষিত জাতি পারবে একটি দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে উন্নত-সমৃদ্ধভাবে গড়ে তুলতে।’

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসেইন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Previous articleঘুমিয়ে থেকে আওয়ামী লীগ আগামীতে ভোট পাবে: আমু
Next article১১ অক্টোবরের মধ্যে এরশাদের আসনে উপনির্বাচন