Home বিভাগীয় সংবাদ নাগরি বর্ণে ছিলটিভাষার স্বীকৃতি এখন সময়ের দাবী

নাগরি বর্ণে ছিলটিভাষার স্বীকৃতি এখন সময়ের দাবী

1070
0

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাগরি বর্ণে ছিলটি ভাষাকে স্বীকৃতি প্রদান সিলেটবাসির প্রাণের দাবি। কারণ, একটি ভাষা ধবংস হলে বৃহৎ একটি জনগোষ্ঠীর ইতিহাস এবং ঐতিহ্য ধবংস হয়। সিলেটবাসীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরপুর। সিলেটি  ভাষার বর্ণমালা’র নাম নাগরি বর্ণমালা । প্রাচীনকাল থেকে নাগরী বর্ণমালায় ছিলটি ভাষার প্রচলন  হয়। আমাদের জন্মের পর থেকে  মায়ের  মুখে এই ভাষা শুনে ও বলে বড় হয়েছি। সরকারী স্বীকৃতি ও সহযোগীতার অভাবে প্রায় এক কোটি লোকের এই আদি ভাষাটি আজ বিলুপ্তির পথে । গোলাম কাদের ও জেমস উইলিয়াম সহ দেশী-বিদেশী অনেকে পিএইচডি করেছেন সিলেটি ভাষার উপর।

বৃহষ্পতিবার বিকেলে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের ড.রাগীব আলী মিলনায়তনে্এক সংবাদ সম্মেলনে নাগরি বর্ণে সিলেটী ভাষা স্বীকৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মুমিনুল হক এসব কথা বলেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে জানান, ছিলটি নাগরি বর্ণমালায় মুন্সী সাদেক আলী  সৈয়দ শাহনুর ও শীতালংশাহ্ সহ অনেক লেখকের প্রায় শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। হালতুন্নবী  রাধানুর ও নুর নচিয়ত  উল্লেখযোগ্য গ্রন্হ । কম্পিউটারে লেখার জন্য মোস্তফা জব্বার আবিস্কৃত বাংলা ফন্ট ‘বিজয়’এর মতো নাগরি ফন্ট আবিস্কৃত হয়েছে। পৃথিবীতে  প্রায় আট হাজার ভাষার মধ্যে তিন হাজার ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা রয়েছে। তন্মধ্যে ছিলটিভাষা একটি, যার নিজস্ব বর্ণমালা আছে। ফান্সের “ভাষা জাদুঘর”এ অসংখ্য ভাষার মধ্যে বাংলাদেশের দুইটি ভাষা’র নাম রয়েছে একটি বাংলা, অপরটি ছিলটি।
সিলেটবাসি হিসেবে আমাদের প্রাণের দাবি, নাগরি বর্ণমালায় সিলেটি ভাষাকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অথবা জাতীয় সংসদে বিল উত্থপনের মাধ্যমে এই  ‘নাগরিবর্ণে ছিলটিভাষা’কে স্বীকৃতি প্রদান সহ জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভূক্ত করে এবং প্রত্যেক প্রাথমিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে সিলেটি ভাষাকে পাঠ দানের সুযোগ করে এই ভাষাকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা।

তাই আমাদের সিলেটবাসি’র প্রাণের দাবি নাগরিবর্ণে ছিলটিভাষা-কে  স্বীকৃতির দাবিতে প্রতিটি জেলা  উপজেলা ও  ইউনিয়নে কমিটি গঠন, সেমিনার প্রাইমারী স্কুল, হাইস্কুল, কলেজে ও  ইউনিয়ন পরিষদের সাথে  আলোচনা সভা, সিলেটি ভাষার উপর ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে  রচনা,কুইজ ও বিতর্ক  প্রতিযোগিতা, গণসাক্ষর অভিযান, মানব বন্ধন করে জনমত গড়ে তুলুন। জনমত গঠনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে  সরকারের  সম্মতি আদায় আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।
আমরা ইতিমধ্যে ৫০টির মত কমিটি গঠন নাগরি পোস্টার  হরফের বই নাগরি  সংবাদ পত্র প্রকাশ ও নাগরি আন্দোলন গ্রন্হ প্রকাশ আটটি স্কুলে নাগরি লেখা প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করেছি। নাগরি বর্ণে সাইন বোর্ড  উত্তোলন ও ফন্ট উনমুক্ত করনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছি।

তিনি নাগরি বর্ণে সিলেটী ভাষার স্বীকৃতি আদায় করতে সাংবাদিক সহ সুশিলসমাজের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কিমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খান, তারেক হাসান চৌধুরী, সিলেট মহানগর সভাপতি বাহারুল হুদা চৌধুরী, বালাগঞ্জ উপজেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক এ.আর কাওছার, সাংগঠনিক সম্পাদক সম্পাদক মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক মাসুম আহমদ, প্রচার সম্পাদক রুমেল হক, সদস্য জাবের আহমদ সরদার, জৈন্তাপুর উপজেলা সভাপতি এইচ.এম আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কোমল চন্দ্র নাথ প্রমূখ।

Previous articleযে আচরণবিধি ভঙ্গ করছে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: সিইসি
Next articleআওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্দয় আচরণ করছে ইসি: হানিফ