ঢাকা: বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পরিস্থিতি এমন যে রাজপথের বিক্ষোভের যেকোনো সময় সহিংসতায় রুপ নিতে পারে। বুধবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, “যুদ্ধাপরাধের দায়ে বাংলাদেশের বিরোধীদলের নেতাকে দেয়া মৃত্যুদন্ডের রায়ের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে আক্রান্ত লাখো মানুষের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে না।”
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থাটির বাংলাদেশ অংশের গবেষক আব্বাস ফয়েজ বলেন, “বাংলাদেশকে অবশ্যই মতিউর রহমান নিজামী এবং অন্য সবার বিরুদ্ধে দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ রদ করতে হবে।”
তিনি বলেন, “মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত নৃশংস, অমানবিক ও অমর্যাদাসূচক শাস্তি, এটা কখনো ন্যায়বিচারের ব্যবস্থা করতে পারে না।”
বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৯৭১ সালের ভূমিকার কারণে মাওলানা নিজামীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
বিবৃতিতে আব্বাস ফয়েজ বলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধকালে করা অপরাধ ভয়ঙ্কর এবং এর নির্যাতিতরা অবশ্যই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রাখেন। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড কেবল সহিংসতার চক্র স্থায়িত্ব করে।”
তিনি বলেন, “মৃত্যুদণ্ডাদেশ কেবল জীবনের অধিকারের লঙ্ঘনই নয়, এটা অপরিবর্তনযোগ্য শাস্তি। কারো এই সাজা কার্যকর করা হলে পরে সম্ভাব্য বিচারিক ভুল বা ন্যায়বিচার লঙ্ঘনের ঘটনা সংশোধনের কোনো অবকাশ থাকে না।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “এ পর্যন্ত ট্রাইবুনালে যতগুলো রায় দেয়া হয়েছে তাতে প্রধানত জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্তদের ক্ষেত্রেই বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ট্রাইবুনাল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিচার পদ্ধতি নিয়ে মানবাধিকারকর্মীরা প্রশ্ন তুলে আসছেন বলে দাবী করেছেন নিজামীর পক্ষের আইনজীবিরা।”
বিবৃতিতে আব্বাস ফয়েজ বলেন, “আইসিটি বাংলাদেশে ন্যায়বিচার ও সমন্বয়ের অপূর্ব সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু বিচার নিরপেক্ষ হচ্ছে না মর্মে আসামিপক্ষের অব্যাহত দাবির প্রেক্ষাপটে এটা কেবল বিপরীত ক্রিয়াই সৃষ্টি করছে এবং অসন্তোষ বাড়াচ্ছে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “আইসিটির পূর্বেকার মৃত্যুদণ্ডাদেশের ফলে রাজপথে ব্যাপক বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল, এবারও জামায়াতে ইসলামী এই রায়ের বিরুদ্ধে তিন দিনের হরতাল আহ্বান করেছে।”
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে আব্বাস ফয়েজ বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তেজনাকর। রাজপথের বিক্ষোভের যেকোন সময় সহিংসতায় রুপ নিতে পারে।”
তিনি বলেন, “এটা খুবি গুরুত্বপূর্ণ যে, নিরাপত্তা বাহিনীর উচিত জনগণের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করার অধিকার নিশ্চিত করা। তেমনি সব পক্ষের নেতাদের উচিত তাদের কর্মীরা যাতে বাড়াবাড়ি না করে তা নিশ্চিত করা।”