নিউজ ডেস্ক: সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফেডারেশন কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র প্রেসিডেন্ট বিটিশ বাংলাদেশী উদ্যোক্তা ডক্টর ওয়ালী তছর উদ্দিন এমবিই’র সাথে সৈজন্য সক্ষাৎ করেছেন সিলেট ক্যামব্রিয়ান কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ডেইলী আমার বাংলা সম্পাদক শিব্বির আহমদ ওসমানী। এময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের বোর্ড অফ ডাইরেক্টর নুরুল ইসলাম খাঁন, মুস্তাক আহমদ, ডেইলী আমার বাংলা’র ফটো সাংবাদিক আব্দুল আলিম প্রমূখ।
ডক্টর ওয়ালী তছর উদ্দিন এমবিই দেশ নিয়ে তার বিভিন্ন স্বপ্নের কথা জানিয়ে বলেন, আমরা দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করতে সুদূর বিলাত থেকে বাংলাদেশে আসি। দেশের মানুষের সার্বিক সেবা দেয়ার জন্য আমরা গড়ে তুলেছি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকে সেবার পাশাপাশি শতশত মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
ডক্টর ওয়ালী তছর উদ্দিন মৌলভীবাজার জেলায় ১৯৫২ সালে ১৭ এপ্রিল সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৭ সালে ১৩ নভেম্বর মাত্র ১৪ বছর বয়সে বিলাতে পাড়ি জমান। তিনি স্কটল্যান্ডের কারি কিং হিসেবে খ্যাত। তার নেতৃত্বে ঢাকায় আরেকটি আন্তর্জাতিক মানের ২ হাজার বেডের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পার হওয়ার আগেই তিনি বিভিন্ন সমাজিক কাজে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিবেশীদের বিভিন্ন সামাজিক কাজে সহযোগিতা করে রেখেছেন অনন্য অবদান। তার সে সময়ের একাধিক স্কুল বন্ধুরা আজও তার অবদানের কথা ভুলতে পারেননি।
বিলাতে গিয়ে তিনি কিছুদিন বিভিন্ন প্রতিষ্টানে চাকুরি করেন। চাকুরির পাশাপাশি তিনি লেখা পড়াটিও ঠিক রাখেন। অল্পদিনের মধ্যে এডিনবরায় বোম্বে তান্দরি নামে একটি রেষ্টুরেন্ট কিনে নিয়ে রেষ্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেন।
কিছুদিনের মধ্যে বিখ্যাত রাধুনি টমি মিয়া তার রেষ্টুরেন্টের পার্টনার হয়ে যান। টমি মিয়া তার পার্টনার হওয়াতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় নতুন মাত্রা যোগ হয়। ধীরে ধীরে শুধু এডিনবরা নয় গোটা ব্রিটেনে আলোড়ন সৃষ্টি করে তার এ রেস্টুরেন্ট। রেষ্টুরেন্ট ব্যসসায় সাফল্যের কিছুদিন পড়েই তিনি বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের সাথেও জড়িত হন। গার্মেন্টস শিল্পে সফল হওয়ার পর তিনি আরও ৪ টি রেস্টুরেন্ট দেন। সব রেস্টুরেন্টই ছিল তার সফল ব্যবসা।
ভ্রমণ পিপাসু হওয়া তিনি নিজে ট্রাভেল এজেন্সিও করেছেন, যাতে সকল মানুষ সহজে বিভিন্ন দেশে যাতায়ত করতে পারে। ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসাও ছিল সফল। পরে তিনি এ ব্যবসাকে আরো বড় করে প্রন্ট লাইন ইন্টারন্যাশনাল এয়ার সার্বিসেস নাম দেন।
২০০০ সালে তিনি এডিনবরায় “ব্রিটানিয়া স্পাইস” নামে একটি রেস্টুরন্টে দেন।এই রেস্টুরেন্ট এডিনবরায় সহ গোটা ব্রিটেনে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। ২০০১ সাল থেকে প্রতি বছর ন্যাশনাল, রিজিওনাল ও লোকাল এ্যাওয়ার্ড লাভ করে আসছেন। এডিনবরার প্রায় সকল সংবাদপত্র তার “ব্রিটানিয়া স্পাইস” সম্পর্কে ফিচার প্রকাশ করেছে।
২০০৪ সালে এডিনবরা রেস্টুরেন্টস এসোসিয়েশনের অফিসিয়াল গাইডে ২৩ টি বিখ্যাত রেস্টুরেন্টর মধ্যে “ব্রিটানিয়া স্পাইস” প্রথম স্থান স্থান লাভ করে। ২০০৫ সালে ড. ওয়ালী তছর উদ্দিনকে এডিনবরার বিখ্যত দৈনিক দি স্কটম্যান স্কটল্যান্ডের কারি কিং হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
১৯৯১ সালে ২৯ এপ্রিল দেশে ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড়ে কয়েক লাখ মানুষ মারা যায়। এই দূর্গতদের পুর্নবাসনের জন্য ড.ওয়ালী তছর উদ্দিন এগিয়ে আসেন। তাকে সহযোগিতা করেন তৎকালীন ব্রিটেনের মন্ত্রী আলিস্টার ডালিংসহ বিভিন্ন মন্ত্রী এমপি। তার এই সহযোগিতার সংবাদটি স্কাই নিউজ ও বিবিস সহ বিভিন্ন মিডিয়া গুরুত্ব সহকারে প্রচার করে।
১৯৯১ সালেই তার একান্ত প্রচেষ্টায় বাঁশখালিতে আশ্রয়কেন্দ্র কাম হাইস্কুল নির্মাণ হয়। এতে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষের আশ্রয় কেন্দ্র ও শিক্ষার ব্যবস্থা হয়। ১৯৮৮ ও ৯৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় তিনি নিজে ১২ হাজার পাউন্ড বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিকে প্রদান করেন।
তার এই সহযোগিতায় মুগ্ধ হয়ে “এশিয়া নেট” চ্যানেল তাদের পুরো টিম নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন এবং তাকে নিয়ে বেশ কয়েকটি বিশেষ প্রতিবেদন করে।
২০০৪ বন্যদূর্গতদের জন্য তিনি ৪৪ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করেন এবং সুষ্ঠ বন্ঠন করেন। ২০০১ সালে ভারতে ভূমিকম্প দূর্গতদের মাঝে ৪৪ হাজার পাউন্ড বন্ঠন করেন। ২০০৫ সালে শ্রীলম্কা ও পাকিস্তারে সুনামির আঘাত হানে নিহত হয় লাখ লাখ মানুষ।এই দুগতদের মাঝে ১৪ হাজার পাউন্ড বন্ঠন করে দেন।
এছাড়াও তিনি সিলেটে লায়ন্স শিশু হাসপাতাল, দিরাই ফিমেল একাডেমি, অতীশ দীপংকর বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশন, সিলেট প্রেসিডেন্সী ইন্টারন্যাশনাল স্কুল সহ নৌবাহিনীরে জাহাজ কেনাতে রয়েছে তার অসামান্য অবদান।
এছাড়াও তিনি সামাজিক ভাবে আরো অনেক অবদান রেখেছেন। সব মিলিয়ে ড. ওয়ালী তছর উদ্দিন বাংলাদেশের এক উজ্জল নক্ষত্র এবং আমাদের গর্ব।
ড. ওয়ালী তছর উদ্দিন বাংলাদেশের এক উজ্জল নক্ষত্র এবং আমাদের গর্ব।
Comments are closed.