Home আইন বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও রিমান্ড নিয়ে আপিলের রায় প্রকাশ

বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও রিমান্ড নিয়ে আপিলের রায় প্রকাশ

799
0

ঢাকা: ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও রিমান্ড বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে আপিল বিভাগের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। সূত্র জানায়, রায়ের অনুলিপি আজই সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেয়া হবে।
গত ২৪ মে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন। তবে আপিল বিভাগ বলেছিলেন, রায়ে কিছু মোডিফিকেশন করা হবে। মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে ডিবি পুলিশ ঢাকার সিদ্ধেশরী এলাকা থেকে ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনির্ভাসিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে। পরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় রুবেল মারা যায়।
পুলিশ হেফাজতে রুবেলের মৃত্যুর ঘটনায় কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের দায়ের করা রিট মামলায় ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধান ৬ মাসের মধ্যে সংশোধন করতে সরকারকে নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি উক্ত ধারা সংশোধনের পূর্বে কয়েক দফা নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সরকারকে বলা হয়।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে আপিল দায়ের করে তত্কালীন চারদলীয় জোট সরকার। তখন আপিল বিভাগ লিভ পিটিশন মঞ্জুর করলেও হাইকোর্টের নির্দেশনাসমূহ স্থগিত করেনি।
২০১০ সালের ১১ আগস্ট মামলাটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে। তখন আদালত হাইকোর্টের নির্দেশনাসূমহ বাস্তবায়নে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সরকারকে তা জানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও জনগুরুত্বপূর্ণ মামলার ওই নির্দেশনাসূমহ বাস্তবায়নে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা আদালতকে জানাতে পারেনি সরকার।
হাইকোর্টের নির্দেশনা সূমহ ছিল : ক. আটকাদেশ (ডিটেনশন) দেওয়ার জন্য পুলিশ কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে পারবে না। খ. কাউকে গ্রেফতার করার সময় পুলিশ তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে। গ. গ্রেফতারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারকৃতকে এর কারণ জানাতে হবে। ঘ. বাসা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য স্থান থেকে গ্রেফতারকৃতর নিকটাত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহক মারফত বিষয়টি জানাতে হবে। ঙ. গ্রেফতারকৃতকে তার পছন্দসই আইনজীবী ও নিকটাত্মীয়র সঙ্গে পরামর্শ করতে দিতে হবে। চ. গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশক্রমে কারাগারের অভ্যন্তরে কাঁচ নির্মিত বিশেষ কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। কক্ষের বাইরে তার আইনজীবী ও নিকটাত্মীয় থাকতে পারবেন। ছ. জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ওই ব্যক্তির ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হবে। ট. পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করবেন। বোর্ড যদি বলে ওই ব্যক্তির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে তাহলে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ম্যাজিষ্ট্রেট ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং তাকে দণ্ডবিধির ৩৩০ ধারায় অভিযুক্ত করা হবে। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে তখন ৬ মাসের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল।

Previous articleবিভাগওয়ারী আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দায়িত্ব বণ্টন
Next articleসেনা বিদ্রোহে উস্কানির মামলায় মান্নার জামিন