সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ক্ষোভ প্রকাশ দিরাই-শাল্লায় উন্নয়ন প্রকল্পের ২০ লাখ টাকা ফেরত

0
485

আবুল হোসাইন,দিরাই থেকেঃ
হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লায় ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বরাদ্ধকৃত টিআর, কাবিখা ও ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের লাখ লাখ টাকা হরিলুট হয়েছে।সরকারের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণও সংস্কারের জন্য নেওয়া এ সকল প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সময় মত কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় বরাদ্ধের ২০ লাখ টাকা ফেরত গিয়েছে। এসব বিষয়ে গত শনিবার দুপুরে দিরাই উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দিরাই শাল্লার সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে সমন্বয় সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার ও সকল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় দিরাইও শাল্লার দায়িত্ব প্রাপ্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এরশাদুল আলম জানান, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় ১৩ টি ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি (২য় পর্যায়) ১ কোটি ৬৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্ধ ছিল। বরাদ্ধের অনুকুলে দিরাইয়ে ৪৪টি ও শাল্লায় ১৭টি প্রকল্পে উপকার ভোগী শ্রমিক নির্বাচন করা হয় ২ হাজার ৭২ জন। এর মধ্যে দিরাই উপজেলার শতভাগ কাজ হয়েছে কুলঞ্জ,করিমপুর,চরনাচর ও সরমঙ্গল এবং শাল্লা উপজেলা বাহারা ও হবিবপুর ইউনিয়নে। তা ছাড়া জগদলে ৫ প্রকল্পের ৩ টি তাড়লের ৫ টির মধ্যে ৩টি, ভাটিপাড়া ৪টার মধ্যে ৩টি রফিনগরে ৫টার মধ্যে ৩টি ও রাজানগরের ৫টি প্রকল্পেই আংশিক কাজ হয়েছে। শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ও শাল্লা ইউনিয়নে একই অবস্থা। সময়মত প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়িত না হওয়ায় দিরাই ্উপজেলার ১০ লাখ ৮৪ হাজার ও শাল্লা উপজেলার ৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ফেরত গেছে বলেও তিনি জানান। এদিকে উপস্থিত জন সম্মুখে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার পরিসংখ্যানে প্রকল্প কাজে অনিয়ম ও দূর্নীতির ফিরিস্তি শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এসময় তিনি বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা গঠিত ও পরিচালিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারদের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অবহেলা জনগণকে হতাশ করেছে । জনগুরুত্বপূর্ণ এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়া এবং কাজে অবহেলা কখনো কাম্য নয়। ৪০ দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়নে যে সব চেয়ারম্যান মেম্বাররা ব্যর্থ হয়েছেন বা যাদের বিরুদ্ধে তাদেরকে কালো তালিকা ভূক্ত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দৃষ্টি আকর্ষন করেন ক্ষুব্ধ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি। সমন্বয় সভার বাহিরে আলাপ কালে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন প্রকল্প সভাপতি জানান, পিআইও অফিস ও ট্যাগ অফিসাররা মিলে প্রতি ৩০/৩৫ভাগ কমিশন আদায় করেন। ফলে সঠিক ভাবে কাজ করা সম্ভব হয়নি। রাজানগর ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার রনধীর ভূষণ চৌধুরী জানান,রাজানগরের ৫টি প্রকল্পেই্ পানির জন্য কাজ করা যায়নি। একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন,দীর্ঘদিন ধরে টিআর,কাবিখার প্রতিটন চাল/গম সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অর্ধেক মূল্যে ক্রয় করছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা।্্্একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় ও প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে এ অবস্থা চলে আসছে। ফলে দিরাই ও শাল্লায় প্রকল্পের বরাদ্ধের উদ্দেশ্য সফল না হয়ে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা উন্নয়নের নামে হরিলুট হচ্ছে ।