ঢাকা: আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিন স্তরের নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। সিটি নির্বাচনকে ঢাকাবাসীর প্রতিক্ষিত ও প্রত্যাশিত নির্বাচন উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, নির্বাচনকে নিরপেক্ষ অবাধ ও আনন্দ মুখর করতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার অনুযায়ী নিরাপত্তাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটা হচ্ছে নির্বাচন পূর্ব নিরাপত্তা ও নির্বাচন চলাকালে নিরাপত্তা এবং নির্বাচন পরবর্তি নিরাপত্তা। ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যার পর থেকে ২৮ এপ্রিল রাত পর্যন্ত মহানগরীতে চলাচল করবে না।
শনিবার দুপুরে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন কমিশনার।
কমিশনার বলেন, নির্বাচনের দিন ৯৩টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতে পুলিশের ২টি মোবাইল পার্টি টহল দিবে। যাতে লোকজন নিরাপদে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে। এছাড়াও ৩১টি স্টাইকিং রিজার্ভ ফোর্স প্রস্তুত থাকবে। প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রে পর্যপ্ত পুলিশ ও আনসার মোতায়েন থাকবে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশের হাতে ১২টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সাধারণ কেন্দ্রে ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র থাকবে। এছাড়াও র্যা্ব-বিজিবির টহল থাকবে। ব্যারাকে প্রস্তুত থাকবে সেনাবাহিনী।
নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি দাবি করে কমিশনার বলেন, ইতোমধ্যেই পুলিশ, র্যা ব, আনসার সদস্যসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নগরীতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোন নাশকাতা হয়নি।
কমিশনার আরো বলেন, নির্বাচনের দিন নিরাপত্তা সমন্নয় করার জন্য পুলিশের চারটি কন্ট্রোলরুম থাকবে। যাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ফোর্স থাকবে। এছাড়া নির্বাচনের আগের দিন দক্ষিনের ৮টি এবং উত্তরের ৮টি কেন্দ্র থেকে ব্যালট সামগ্রী বিতরণ করার সময় র্যাএব ও পুলিশের কঠোর নজরদারি থাকবে। ভোট গ্রহণ শেষে ভোট গণনা কেন্দ্রে তথা বঙ্গবন্ধু আন্তরজার্তিক সম্মেলন কেন্দ্র ও গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চের পুরো এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ থাকবে। ওই এলাকা সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা হবে। যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির আগেই ব্যবস্থা নেয়া যায়।
ভোটারদের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে মেটাল ডিরেক্টর দিয়ে চেক করে ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশ করানো হবে। এছাড়াও প্রতিটি প্লাটুনে ত্রিশজন করে ঢাকা শহরে ৭০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতি প্লাটুনে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট থাকবেন। ইতোমধ্যে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশের ২৩টি মোবাইল টিম মাঠে রয়েছে।
যানবাহনের চলাচলের ব্যাপারে কমিশনার বলেন, ২৫ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা শহরে নির্বাচন কমিশনের স্টিকার লাগানো গাড়ি ছাড়া কোনো মোটর সাইকেল চালানো যাবে না। এছাড়াও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অন্যান্য যানবাহন ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যার পর থেকে ২৮ এপ্রিল রাত পর্যন্ত মহানগরীতে চলাচল করবে না। ২৫ এপ্রিল ভোর থেকে ১ মে রাত ১২টা পর্যন্ত সব ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র বহন প্রদর্শন নিষিদ্ধ থাকবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা শহরে দুই সিটি করপোরেশনে দুই ধরনের কেন্দ্র রয়েছে। একটি একক কেন্দ্র অন্যটি পুঞ্জিবিত কেন্দ্র। মোট ১৯৮২টি কেন্দ্র রয়েছে। এ মধ্যে ৫৫৩টি সাধারণ এবং ১৪২৯টি গুরুত্বপূর্ন কেন্দ্র।
কমিশনার বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যাতে কোন ধরণের হামলা না হয় সে দিকে খেয়াল রেখেই নিরাপত্তাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। নির্বাচনি উত্তেজনা থাকা পর্যন্ত পুলিশ গোয়েন্দা ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং থানা পুলিশ সমন্নিত ভাবে কাজ করবে।