পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নবজাতক কন্যা সন্তান বিক্রি হওয়ার এক চাঞ্চল্যকর খবরের সত্যতার প্রমাণ মিলেছে। সন্তানকে যখন কোল থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, দারিদ্রের নির্মম কষাঘাতে পর্যুদস্ত ছয় সন্তানের মা তখন দিশেহারা হয়ে যান।
অভাবের তাড়না সইতে না পেরে মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় নিজের নবজাতক সন্তানটিকে বিক্রি করে দেন ছয় সন্তানের মা সেলিনা বেগম (৩২)।
রোববার রাতে সন্তান বিক্রির বিষয়টি ঘটলেও মঙ্গলবার তা জানাজানি হয়। পড়ে এই ঘটনা সেখানে‘টক অব দ্যা টাউনে’ পরিণত হয়।
রোববার রাতেই সেলিনা বেগম নিজের নবজাতক কন্যাকে টাকার বিনিময় অপরের কোলে তুলে দিয়ে জেলা হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান।
হাসপাতাল সূত্র যুগান্তরকে জানিয়েছে, বাগেরহাট জেলার অধিবাসী স্বামী পরিত্যক্তা ৬ সন্তানের জননী সেলিনা প্রসববেদনা নিয়ে রোববার দুপুরে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিন রাতেই হাসপাতালে তিনি একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন।
হাসপাতালের শয্যায় মা সেলিনা বেগমের সঙ্গে পরিচয় হয় অপর শয্যার চিকিৎসাধীন এক রোগী পরিবারের।
চরম দরিদ্রের মধ্যে বাস করা সেলিনা তার ছয় কন্যা সন্তান নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে সংসার জীবন পার করার মধ্যে পুনরায় আর এক নবজাতক সন্তান কোলে আসার সমস্যা তুলে ধরেন ওই পরিবারটির কাছে।
ওই পরিবারের এক কন্যা নিঃসন্তান থাকায় তারা ওই নবজাতককে ক্রয় করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পরে পাঁচ হাজার টাকায় সন্তান বিক্রি করতে সম্মত হন সেলিনা বেগম। তিনি নগদ পাঁচ হাজার টাকা হাতে পেয়ে মহিলা ওয়ার্ড থেকে গোপনে রাতেই সটকে পড়েন।
নবজাতককে ক্রয় করা পরিবারের সদস্যরা জানান, সেলিনা বেগমের অসহায়ত্বের কথা জেনে তার নিঃসন্তান মেয়ের জন্য নবজাতককে ক্রয় করেন।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. ফারুক আলম সাংবাদিকদের জানান, হাসপাতালে সদ্য ভূমিষ্ঠ এক বাচ্চা রেখে চলে গেছেন একজন মা, এ খবর জানতে পেরে আমি পুলিশ ও সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করি।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন জানান, বাচ্চা বিক্রয় হওয়ার অভিযোগ শুনে পুলিশ নবজাতককে হেফাজতে নিয়েছে।