নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রেম মানে না কোনো বাধা বিপত্তি। মানে না কোনো শাসন। এই অমীয় বাণীকে আবারও সত্য প্রমাণিত করলো ‘এলিজা ও আওকাত’ নামের প্রেমিক যুগল। সম্প্রতি ঘটানাটি ঘটেছে সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থানার উত্তর ভাদেশ্বর এলাকার দখারপাড়া গ্রামে।
সরেজমিন পরিদর্শনে ঘঠনার বিবরণে জানা যায়, দখারপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ এবং হুসনে আরা দম্পতির ছেলে আওকাত হোসেন (২৯) একজন ট্যাকনিক্যাল ইঞ্জিানয়ার। তিনি অধ্যায়নকালীন সময়ে দখারপাড়া গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ ও লায়লা বেগমের মেয়ে এলিজা বেগম (২৪)। দু‘জনের বাড়ি একই গ্রামে হওয়ার কারণে কিশোর বয়স থেকে হৃদ্যতা গড়ে উঠে। এলিজা বেগম ও আওকাত হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন মন দেয়া-নেয়ার সুবাদে প্রেম গভীর থেকে গভীরতম হয়। সবার অগোচরে নতুন দাম্পত্য জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে এই প্রেমিক যুগল। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে প্রকাশ পায়। জানতে পারে এলিজা বেগম ও আওকাত হোসেনের পরিবার। আওকাত হোসেনের পরিবার উচ্চ বংশীয়, বিত্তশালী এবং রানৈতিকভাবে প্রভাবশালী থাকায় এলিজা-আওকাতের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি আওকাত হোসেনের পরিবার। এতেই শুরু হয় বিপত্তি। আওকাত হোসেনের পরিবার এলিজার পরিবারের সদস্যদের নোনা রকম হুমকি দিতে থাকে। এতে উভয় পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
আওকাত হোসেনকে তার পরিবার এলিজা বেগমের সাথে কোনো সম্পর্ক না রাখতে চাপ দেয়। কিন্তু আওকাত হোসেন তার সিদ্ধন্তে অনঢ় থাকে। আওকাত হোসেনকে শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের পাশাপাশি তাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হলে তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যায়। তার সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে তার পরিবার। আইনি নোটিশ পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয়। পরিবারের সবাই তার বিপক্ষে থাকলেও এলিজা বেগমকে বিয়ে করতে সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নেয়।
বিগত ২০১৫ইং সালে দেশ ছেড়ে প্রবাসে চলে যায় আওকাত হোসেন। এলিজা বেগমের সাথে গোপন যোগাযোগ রাখে প্রেমিক আওকাত। এলিজা বেগমকে বিয়ে দেওয়ার জোড় প্রচেষ্টা এলিজার পরিবার। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে কালক্ষেপণ করে কৌশলের আশ্রয় নেয় এলিজা। ২০১৮ইং সালের দিকে এলিজা বেগম কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি হতে বেড়িয়ে যায়। রাত আবধি সে বাড়ি না ফেরায় বিভিন্ন আত্মীয় স্মজনের বাড়িতে খোঁজ করে তাকে না পেয়ে আওকাত হোসেনকে সন্দেহ করে এলিজার পিতা আব্দুল ওয়াদুদ। তারা গোপন সূত্রে খবর পান, আওকাত বিদেশ থেকে এসে অন্যত্র অবস্থান করে এলিজাকে নিয়ে পালিয়ে গেছে বা তার নির্দেশনায় এলিজাকে অপহরণ করা হয়েছে।
এলিজার পিতা আব্দুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। তাকে আসামী করে মাদকদব্র আইনে ষড়যন্ত্রমূলক মামলাও রুজু হয়ে যায়। গ্রামবাসীর ধারণা, আওকাত হোসেন গোপনে এসে এলিজাকে নিয়ে আত্মগোপনে আছে বা দেশত্যাগ করে অন্যকোনো দেশে চলে গেছে। এলিজা বেগম ও আওকাত হোসেনের পরিবারের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজমান। উভয় পরিবারের প্রতিজ্ঞা আওকাত-এলিজা’কে পেলে তারা জীবন্ত রাখবে না। এই বিষয়ে গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় অপহরণ মামলা হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে।’ এলিজার ভাগ্যে কী ঘটেছে তাহা এখনও পরিষ্কার নয়। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। ঘটনার সুষ্ঠ সমাধানের জন্য গ্রামবাসী অপেক্ষামান। কিন্তু আওকাত হোসেন ও এলিজা বেগমের পরিবারের উগ্রতা ও দ্বন্দ্ব বিষয়টিকে আরো জটিল করে তুলেছে বলে দখারপাড়া গ্রামবাসীর ধারণা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.