বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: ২০১৭ সালে বাংলাদেশে ৭ লাখ ৪২ হাজার ২ শত ৪৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, এটি প্রমাণ করে যে দিন দিন আইনের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। ফলে বিচার পাবার আশায় মানুষ আইনের দারস্থ হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘জেন্ডার, অধিকার ও মতপ্রকাশ : বড় শহরসমূহে ন্যায়বিচারে অভিগম্যতা’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ভারতে উড়িষ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শ্রীকৃষ্ণ রাও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনটির যৌথ আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদ ও বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ঢাকা বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতিসম্পন্ন মেগাসিটি। এখানে একদিকে যেমন সুযোগ সুবিধা রয়েছে তেমনি অন্যদিকে মানুষ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। নারীর প্রতি এই বৈষম্যরোধে আইন প্রয়োজন। আমাদের যথেষ্ঠ পরিমাণে আইনও রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লিঙ্গ বৈষম্য রোধ এবং সমাজে সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য এসব আইনের বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে।
ব্লাস্টের নারী বৈষম্যরোধমূলক কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের নারীদের আইনি সহায়তা দিতে সরকার বিভিন্ন সংস্থায় অর্থায়ন করছে। ২০১৭ সালে ৬৬ হাজার ৬ শত ৪৪ জনকে সরকারি অর্থায়নে আইনি সহায়তা দিয়েছে লিগ্যাল এইড। এর মধ্যে ২৯ হাজার ৮শ ৮২ জন নারী। নারীর বৈষম্যরোধে এটি একটি প্রশংসনীয় কাজ।
অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ বলেন, শহর ও গ্রামে নারীরা অনেক ধরনের সমস্যা ও বাধার মুখোমুখি হয়। তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আইনের শিক্ষার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
অধ্যাপক ড. শ্রীকৃষ্ণ রাও বলেন, গরীব লোকেরা সবসময় আইনকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে। তাদেরকে আইনের সহায়তা নিতে কিভাবে উদ্বুদ্ধ করা যায় সেটি আমাদের বিবেচনা করতে হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকদের আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ না দেয়া হলে তারা আইন থেকে দূরে সরে যাবে। ফলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন মোট তিনটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে সার্বিক সহযোগিতা করেছে কিংডম অব নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বাসি। সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হয়ে দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম বিকেল চারটায় শেষ হয়। এর আগে সোমবার এর উদ্বোধনী পর্বে দেশ-বিদেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, গবেষক এবং মানবাধিকার কর্মীরা অংশ নেন।