আওয়ামীলীগ ক্ষমতা টিকে রাখতেই জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করছে: ব্যারিস্টার মওদুদ

0
454
blank

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকে টিকে রাখতেই জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, দুরভিসন্ধিমূলক কৌশল হিসেবে সরকার জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছে। অনেকে নিরীহ মানুষের ওপর অভিযানের নামে অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে। এটা নিশ্চয়ই সরকারের কোনো কৌশল। তারা দুরভিসন্ধিমূলক স্ট্রাটেজি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদকে আমরা ঘৃণা করি। কিন্তু সরকার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী এবং টিকে রাখার জন্য এই জঙ্গিবাদকে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। এটি সরকারের একটি চাল। আন্তর্জাতিক মহলের সামনে জঙ্গিবাদকে এনে তাদের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়। তাদের ক্ষমতাকে টিকে রাখতেই জঙ্গিবাদকে অতিরঞ্জিত করছে। বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ কেন্দ্রীয় সংস্থা এই সভার আয়োজন করে।
সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম রাহীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, কেন্দ্রীয় নেতা এ বি এম মোশাররফ হোসেন, ফরিদা মনি শহিদুল্লাহ, আবুল খায়ের বাবলু প্রমুখ।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, শুনছি উপজেলা পর্যায়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান করা হবে। এটি করা সরকারের ভুল হবে। এতে করে পুলিশ এবং র্যা ব সাধারণ মানুষকে আরো হয়রানি করবে।
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, এই জঙ্গিবাদ যদি জাতীয় সমস্যা হয় তবে পুলিশ র্যাযব বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে জঙ্গিবাদ নিধন করুন। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে জঙ্গিবাদ নিধনে সরকার উদ্যোগ নিলে বুঝবো সরকার আসলেই আন্তরিক। কিন্তু যদি না নেন তবে ভাববো জঙ্গিবাদ এতো সিরিয়াস কিছু নয়। আপনাদের নিজেদের স্বার্থেই জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছেন।
বিএনপির নিবন্ধন বাতিল প্রসঙ্গে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, চারদিকে শুনছি বিএনপি নির্বাচনে না গেলে নিবন্ধন থাকবে না। আমি বলতে চাই নিবন্ধন থাকুক আর না থাকুক সেটি আমাদের মূখ্য বিষয় নয়। আমাদের মূল উদ্দেশ্য মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। জনগণের গণতান্ত্রিক ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাই বিএনপির লক্ষ্য।
জাতীয় নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। সরকারের প্রতিও মানুষের কোনো আস্থা নেই। কারণ আপনারা দেখছেন পুরো দেশে সরকারি দলের লোকেরা ভোটের ক্যাম্পেইন করছে। ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কালকেও মাগুরাতে ভোট চেয়েছেন। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আপনি ভোটের জন্য সভা করুন সমস্যা নেই। তবে এই নির্বাচনী প্রচারের অধিকার আমাদেরকেও দিতে হবে। সব রাজনৈতিক দল সমান সুযোগ সুবিধা পাবে সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের নামে মামলা দেয়া হচ্ছে, সভা-সমাবেশ করার জন্য ঘরের মধ্যে অনুমতি দেয়। আমাদের কোনো অধিকার আদায় করতে দেয় না। জাতীয় পার্টি পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে গেছে। আমরা এখনই বুঝতে পারছি যে আগামী জাতীয় নির্বাচন কিভাবে আপনারা করতে চান। তার কিছুটা ইঙ্গিত আমরা পাচ্ছি। কিন্তু ওই ধরনের নির্বাচন বাংলাদেশের মাটিতে আর হবে না। যদি মনে করেন এককভাবে নির্বাচন করবেন এবং আমাদেরকে দূরে রেখে, বন্দি রেখে, মামলা দিয়ে এবং আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করে আপনারা নির্বাচন করবেন সেই নির্বাচন কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না এবং একটি অস্থির অবস্থার সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের সব মানুষ, খালেদা জিয়া, দেশের সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবিদের সাথে নিয়ে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করবো আমাদের দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য। আমাদের দেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রেমি। তাদের যদি একবার সুযোগ দেয়া হয় তবে তারা প্রমাণ করে দিবে যে বর্তমান সরকারের জনপ্রিয়তা কত নিচে নেমে গেছে। সেই ভয়েই তারা সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন দেয় না।