আওয়ামী লীগ ও ইসি মিলে গণতন্ত্র হত্যা করেছে: খালেদা জিয়া

0
529
blank
blank

ঢাকা: গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সংলাপ-সমঝোতার মাধ্যমে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।  মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসের’ বিশাল সমাবেশ থেকে তিনি সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা ভিনদেশী লোক নই। এ দেশেরই মানুষ। আর জ্বালাও-পোড়াও-ভাঙচুর নয়, আমরা চাই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে একসাথে মিলে কাজ করতে।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি এ বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে বলেন, ‘কারো বিরুদ্ধে আমাদের রাগ ক্ষোভ নেই। আমরা কষ্ট করেছি, বুঝেছি। ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আসুন, সংলাপ করে আলোচনা করে সমাধান বের করে আনি। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনি।’ জোর করে ক্ষমতায় থাকলেও এ উদ্যোগ বর্তমান সরকারকেই নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় হুঁশিয়ারির সুরে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সঠিক পথে আসুন, গণতন্ত্রের পথে আসুন। না হলে কিন্তু জনগণ কখন জেগে উঠবে বলা যায় না। জনগণকে বেশি দিন ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। কারণ আর কত মায়ের অশ্রু ঝরবে।
দীর্ঘ সময় পরে উন্মুক্ত জনসভায় এসে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সরকারের নানা অনিয়মের সমালোচনা করলেও বিএনপি প্রধান চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তরণে ইতিবাচক ও গঠনমূলক বক্তব্যের ওপর জোর দেন।
৫ জানুয়ারিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ৫ জানুয়ারি কোনো ভোট হয়নি। আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটের কিছু পরগাছা দল ওই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে মানুষ ছিল না, প্রিজাইডিং অফিসাররা ঘুমিয়েছে, কেন্দ্র পাহারা দিয়েছে কুকুর। তিনি বলেন, ভোট দিলেও বোধহয় কুকুর দিয়েছে, মানুষ দেয়নি। তাই এ সরকার অবৈধ, সংসদও বৈধ নয়।

নির্বাচন কমিশনকে অথর্ব, মেরুদণ্ডহীন আখ্যা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, এদের কথা বলার সাহসও নেই। তারা লাটসাহেব হয়ে গেছে, আমাদের নেতারা গেলে কথা বলে না, দেখাও করে না। তারা এত অসহায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চায়। ইসির উদ্দেশে তিনি বলেন, কিছু করতে না পারলে কেন পদ আঁকড়ে আছেন, পদত্যাগ করুন। খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ ও ইসি মিলে গণতন্ত্র হত্যা করেছে।
আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে ২০০৯ সাল থেকে বেশ কয়েকটি নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, সম্প্রতি পৌর নির্বাচনে তারা কিভাবে সিল মেরেছে, সবাই দেখেছে। ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে কেন্দ্রের বাইরে। সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। ভোটারদের ভয় দেখিয়েছে। আমরা সেনা মোতায়েনের দাবি করেছিলাম, তা মানা হয়নি। জনপ্রিয়তা দেখানোর জন্য সরকার এসব করেছে। খালেদা জিয়া বলেন, জনপ্রিয়তা দেখানোর জন্য নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া উচিত।

খালেদা জিয়া বলেন, অনেকে বলেন, ২০১৪ সালে বিএনপি কেন নির্বাচনে গেল না। আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়েছিলাম। অথচ এ দাবিতে আওয়ামী লীগ ১৯৯৫ সালে বহু জ্বালাও পোড়াও করেছে। ১৭৩ দিন হরতাল করেছে। আমরা সংবিধান সংশোধন করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা করেছিলাম।
গণতন্ত্র না থাকলে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে জঙ্গিদের সম্পর্ক রয়েছে। জঙ্গি বাংলা ভাই, আব্দুর রহমানদের তারা ধরেনি। তাদের সময় উদীচী, রমনার বটমূলে জঙ্গি হামলা হয়েছে। জঙ্গিবাদের কথা বলে তারা এত দিন বিদেশীদের ভয় দেখিয়েছে, নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ বলেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই জঙ্গিবাদের উত্থান হয়। মসজিদ, মন্দির গির্জায় হামলা হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, জঙ্গিবাদ আওয়ামী লীগের তৈরি। তারা কিছু দিন পরপর নেশাগ্রস্ত লোকদের ধরে আনে, তারপর তাদের আটকে রেখে খেতে দেয় না, শুকিয়ে গেলে, দাড়ি বড় হলে সবার সামনে এনে জঙ্গি ধরা হয়েছে বলে চালিয়ে দেয়।
খালেদা জিয়া বলেন, জঙ্গিবাদ নয়, আমরা বলতে চাই যারাই এর সাথে জড়িত হবে তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে। শুধু তা-ই নয়, অন্য দেশকে হামলা করার জন্য বাংলাদেশের মাটি আমরা ব্যবহার করতে দেবো না।
সম্প্রতি গুলশানে ইতালির নাগরিকসহ কয়েকজন বিদেশী হত্যাকারীদের কেন ধরা হচ্ছে না জানতে চান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ইতালি নাগরিক হত্যার সময় কেন বিদ্যুৎ বন্ধ ছিল, কেন সিসি টিভি বন্ধ ছিল, জানতে চাই। এসবের জবাব কেবল সরকারের কাছে আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, বিরোধী দল ধ্বংস করা এখন এ সরকারের একমাত্র কাজ। গ্রেফতার, নির্যাতন, গুম, খুন চলছেই। এসব বন্ধ না করলে পরিণতি করুণ ও ভয়াবহ বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি প্রধান।
তিনি বলেন, খুন গুম করে জোরজবরদস্তির যে রাজতন্ত্র কায়েম করেছেন, তা ভালো ফল বয়ে আনবে না। রাজতন্ত্র বন্ধ করুন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, আপনাদের দিয়ে অন্যায় কাজ করানো হচ্ছে। এগুলো বন্ধ করুন। আমরা একসাথে থাকতে চাই। সব ধর্মের মানুষ একসাথে থাকলে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে পারব।
সরকার কথায় কথায় বিরোধী দলকে ফাঁদে ফেলতে আইন করছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপি প্রধান।
সরকার দেশকে ফোকলা করে দিচ্ছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, দেশে কেউ শান্তিতে নেই। কয়েকটি ফাইওভার করলেই উন্নয়ন হয় না। দ্রব্যমূল্য সন্ত্রাস দারিদ্র্য বাড়ছে। লুটপাট চলছে। সম্পদ বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। বড় প্রজেক্ট নেয়া হচ্ছে বড় লুটপাটের জন্য। কৃষকেরা ভালো নেই। ধানের ন্যায্যমূল্য তারা পাচ্ছেন না। কৃষি উপকরণের দাম বাড়ছে। শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পাট, গার্মেন্ট, আবাসন শিল্প ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক লুটপাট করা হচ্ছে। শেয়ার মার্কেটের কত লোক পথে বসেছে। কুইকরেন্টালের নামে লুটপাট চলছে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে ছাত্রলীগ-গুণ্ডালীগদের রাজত্ব। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বহিরাগতদের বের করে দেয়ার আহ্বান জানান।
নতুন পে-স্কেলের মাধ্যমে বিভিন্ন সার্ভিসের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, শিক্ষকদের কোনো অবহেলা, অপমান করা যাবে না। তাদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, বৈষম্য সৃষ্টির জন্য নয়, ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ এগিয়ে নেয়ার জন্য।
বিশ্ববাজারে দাম কমলেও জ্বালানি তেলের দাম কেন কমানো হচ্ছে না জানতে চান খালেদা জিয়া। তিনি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দাবি জানান।
জাতীয় প্রেস কাব দখল করা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বহু সাংবাদিক আজ বেকার। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হচ্ছে না। টকশো নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। মাহমুদুর রহমানকে জেলে রাখা হয়েছে অন্যায়ভাবে। মাহমুদুর রহমান মান্নারও মুক্তি দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশে কোনো মানবাধিকার নেই । আন্তজার্তিক সংস্থা এ বিষয়ে বারবার কথা বললেও সরকারের কানে বাতাস ঢুকছে না। এমন সময় ঢুকবে যখন সময় থাকবে না।
তিনি বলেন, দেশে মহিলাদের ওপর এখন নির্যাতন চলছে। পুলিশ পর্যন্ত তাদের গায়ে হাত উঠাচ্ছে। এসব আওয়ামী লীগের অভ্যাস।
পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যায় আদেশ আপনারা মানবেন না। জুলুম করবেন না। সিভিল প্রশাসনকে বলেন, আমরা কারো চাকরি খাব না। মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, জ্বালাও পোড়াও নয়, সত্যিকার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি ছাত্রসমাজকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বিএনপি সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। জালেম এ সরকারের বিদায় হবে। গণতন্ত্র ফিরে আসবে।
সমাবেশ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকেই নয়া পল্টন কার্যালয় অভিমুখে মানুষের ঢল নামে। জনসভা বিকেলে পরিণত হয় জনসমুদ্রে। ফকিরেরপুল মোড় থেকে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তোরাঁ পর্যন্ত জনসভাসীমা মহানগর পুলিশ বেঁধে দিলেও বেলা ৩টায় এটি পূর্বে আরামবাগ এবং পশ্চিমে কাকরাইল মোড়, বিজয়নগর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
জনসভা মঞ্চের চার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পাশাপাশি ‘নিখোঁজ’ নেতা ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলম, কারাগারে বন্দী অবস্থায় মারা যাওয়া নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু, মামলার কারণে আত্মগোপনে থাকা মির্জা আব্বাস ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, কারাবন্দী চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ এবং ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসানের প্রতিকৃতি সংবলিত পোস্টার টাঙানো হয়।
গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ পূর্ণ সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আরো বক্তব্য রাখেনÑ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, মহিলা দলের শিরিন সুলতানা, ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশার, আবু সাঈদ খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনির হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ও সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন।
সভামঞ্চে কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের অন্যান্য নেতার মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আহমেদ আজম খান, আব্দুল মান্নান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আ ন হ আখতার হোসেন, খায়রুল কবির খোকন, নূরে আরা সাফা, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আব্দুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন, শামীমুর রহমান শামীম, তাইফুল ইসলাম টিপু, শফিউল বারী বাবু, হাবিবুর রহমান হাবিব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সাইফুল আলম নীরব, আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, শহিদুল ইসলাম বাবুল, রফিক শিকদার, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ক্ষমতাসীন সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় রাজনীতি প্রবর্তনের মাধ্যমে গণতন্ত্র উদ্ধার করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। অথচ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গণতন্ত্র পুরোপুরি নিহত এবং কারাগারে রুদ্ধ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা এবং ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার বিএনপি এবং খালেদা জিয়াকে ভয় পায় এ জন্য তাকে বের হতে এবং জনসভা করতে দিতে চায় না।
বিগত আন্দোলনে বিএনপির ওপর নির্যাতনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ১ বছরে তাদের নিহত হয়েছেন ৪৪০ জন, গুম এবং নিখোঁজ রয়েছেন ২৬৭ জন এবং আহত ও পঙ্গু হয়েছেন ৩৩৭ জন নেতাকর্মী। এ ছাড়া কারাগারে বন্দী রয়েছেন অসংখ্য নেতাকর্মী। দেশের ক্রান্তিলগ্নে নেতাকর্মীসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

বেলা ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে জনসভা শুরুর আগে জাসাসের শিল্পীরা সরকারের দমনপীড়নে গুম-খুন ও নির্যাতনের ওপর লেখা গান পরিবেশন করেন।  জনসভা উপলে ফকিরেরপুল থেকে কাকরাইল পর্যন্ত মঞ্চসহ বিভিন্ন সড়কের গলিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন করা হয়। মঞ্চের কাছে উঁচু ভবনগুলোতেও পুলিশ ও বিএনপির প থেকে আলাদা পাহারা বসানো হয়।