ইস্যু ছাড়াই ফের বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার শুরু হয়েছে: রিজভী

0
514
blank

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, কোনো ইস্যু বা আন্দোলন সংগ্রাম কিংবা কোনো কারণ ছাড়াই বিশেষ অভিযানের নামে দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আবারো গণগ্রেফপ্তা শুরু করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিশেষ অভিযানের নামে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ ও ডিবি পুলিশ হানা দিয়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালাচ্ছে। বাড়িতে নেতাকর্মীদের না পেলে তাদের পরিবারের সদস্যদের লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। এমনকি শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছেনা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিপীড়ন থেকে। আজ সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

রিজভী বলেন, গতকাল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে সংবর্ধনা দিয়ে নয়াপল্টনস্থ ভাসানী ভবনে মহানগর বিএনপি কার্যালয় থেকে ফেরার পথে মতিঝিল থানার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. শামসুদ্দিন বকুল এবং মো. হারুন মিয়াকে মতিঝিল থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। শিল্পনগরী টঙ্গী এলাকায় পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা মিলে অভিযানের নামে গোটা এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এ সময় ২০ দলীয় জোটের ১৫ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এই তাণ্ডবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার এমনকি মাদক ব্যবসায়ীরাও যুক্ত হওয়ায় পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে টঙ্গীতে একযোগে ১৫টি ওয়ার্ডে বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বাসায় তল্লাশির নামে হামলা চালানো হয়।

রিজভী লিখিত বক্তব্যে বলেন, আকস্মিকভাবে দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- সরকারের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়ে চোরাবালির মধ্যে ডুবে যাচ্ছে। বিশেষ নজরদারির নামে সারা দেশে কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের জঙ্গিদের সাথে যুক্ত করে যেভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা পুলিশরা দলন-পীড়ন করে হয়রানি ও জুলুম করেছে তা নজিরবিহীন। এখন আবার সরকার সেই হেফাজতের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতে চাচ্ছে শুধুমাত্র ভোটের জন্য। এটা বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার ও সরকারপ্রধানের আপসকামী অনৈতিক রাজনীতির এক কলঙ্কজনক দৃষ্টান্ত।

রিজভী বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের কাছ থেকে একটি সরিষার দানাও আদায় করতে পারেনি, তিস্তার এক বালতি পানি পাওয়ারও গ্যারান্টি পাননি। কূটনৈতিক প্রজ্ঞা প্রদর্শনের বদলে প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র দেশ বেচা-বিক্রির খেলায় মেতে উঠেছেন। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জসহ হাওর এলাকাগুলোতে মেঘালয়ের পাহাড় থেকে বয়ে আসা পানির ঢলে বিস্তীর্ণ এলাকার অধিবাসীরা এখন হাহাকার করছে। পাহাড়ি ঢলে হাওর এলাকায় সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা ঢাকতেই দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রিজভী বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতি লুটপাটের ওপর নির্ভরশীল। প্রকাশ্যে দুর্নীতিকে সমর্থন ও আশকারা দিয়েছে বর্তমান ভোটারাবহীন আওয়ামী সরকারের প্রচণ্ড ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা। তার ওপর মরার ওপর খাঁড়ার ঘার মতো ডলারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, আর এই কারণে হু হু করে বাড়ছে আমদানি পণ্যর দাম। ক্ষমতাসীনদের সৃষ্ট জাতীয় অর্থনীতির চরম দুর্দশা আড়াল করতেই দেশব্যাপী এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চালানো হচ্ছে এই পুলিশি সাঁড়াশি অভিযান। রিজভী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার অভিযান, বাসায় বাসায় পোশাকধারী পুলিশ ও সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশের অভিযান এবং সরকারি ক্যাডারদের বেপরোয়া রক্তারক্তির শিকার হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।