এই নরক বন্ধ করার সময় এখনই : জাতিসংঘ মহাসচিব

0
447
blank

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ঘৌতায় নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের অস্ত্রবিরতি দ্রুত কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে গুতেরেসের এ আহ্বানে সাড়া দেয়নি সিরিয়া প্রশাসন। গতকালও ঘৌতায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনী বিমান হামলা চালায়। গতকাল সোমবারও এই হামলায় শিশুসহ ১৪ জন নিহত হয়। আর গত এক সপ্তাহে এ অভিযানে প্রাণ হারিয়েছে পাঁচ শতাধিক মানুষ।

জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৩৭তম অধিবেশন উদ্বোধনকালে মহাসচিব গত শনিবার নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবের প্রশংসা এবং এর বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব কার্যকর বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়েই অর্থপূর্ণ হয়। এ কারণেই আমি চাই, প্রস্তাবটি দ্রুত বাস্তবায়িত এবং টেকসই হোক। পূর্ব ঘৌতার পক্ষে অপেক্ষা করা সম্ভব নয়। বিশ্বের এই নরককে বন্ধ করার এখনই সময়।’

কয়েক দিন ধরে আলোচনার পর গত শনিবার নিরাপত্তা পরিষদে এ প্রস্তাব অনুমোদন পায়। প্রস্তাবে ‘দেরি না করে বাস্তবায়ন’-এর তাগিদ দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, গতকাল সিরিয়া সরকারের বোমা হামলায় অন্তত ১০ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়। এদের মধ্যে ৯ জন একই পরিবারের সদস্য। রাজধানী দামেস্কের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান শহর দৌমায় সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় একটি বাড়ি ধসে গেলে ওই ৯ সদস্য চাপা পড়ে। ইসলামপন্থী দুটি গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণাধীন ঘৌতায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অভিযান শুরু করে সিরীয় বাহিনী। ঘৌতার চারপাশের শহরগুলো সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। ফলে এই ছিটমহলের বাসিন্দারা অনেকটাই বন্দি অবস্থায় রয়েছে। খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তারও তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

সরকারি বাহিনীর হামলায় গত রবিবারও শিশুসহ ১৪ জন নিহত হয়। আসাদ বাহিনীর হামলায় গত এক সপ্তাহে নিহত হয়েছে ৫৩০ জন। এর মধ্যে শিশু ১৩০টিরও বেশি। আবার বিমান হামলার পর অনেকের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। সিরিয়ান আমেরিকান মেডিক্যাল সোসাইটি জানায়, শ্বাসকষ্ট নিয়ে অন্তত ১৬ রোগী তাদের কাছে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের অভিযোগ, সিরিয়া প্রশাসন পূর্ব ঘৌতায় রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার করছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনের প্রধান জেইদ রা’আদ আল হুসেইন জেনেভায় বলেন, ‘আমাদের সতর্ক হওয়ার কারণ রয়েছে। সাত বছর ধরে আমরা সহিংসতা বন্ধে ব্যর্থ হয়েছি। সাত বছর ধরে গণহত্যা চলছে।’ সিরিয়ায় সাত বছর ধরে চলা লড়াইয়ে তিন লাখ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। আগামী বছরই এই লড়াই অষ্টম বছরে পড়বে।

সূত্র : এএফপি, রয়টার্স।