এনআইডি লুকিয়ে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে মিলবে না পাসপোর্ট

0
820
blank
blank

ঢাকা : বাংলাদেশের পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদর্শন না করলে পাসপোর্টের আবেদন জমা নেয়া হবে না। সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করেছে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর। সম্প্রতি অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (পাসপোর্ট) মো. শাহজাহান কবির স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, দেশের অভ্যন্তরে আঞ্চলিক পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসসমূহে আবেদনকারীরা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) থাকা সত্ত্বেও তা গোপন করে জন্ম নিবন্ধন প্রদর্শন করে পাসপোর্ট আবেদন করছেন, এতে নানাবিধি জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

এ অবস্থায় অধিদফতরের কর্মচারীদের পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করার আগে কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সেগুলো হলো- ১৮ বছর ও তার ঊর্ধ্বে আবেদনকারীদের এনআইডি প্রদর্শন বাধ্যতামূলক, আবেদনকারীর বয়স ১৫ বছরের কম হলে তার পিতা ও মাতার এনআইডির কপি দেখাতে হবে। এছাড়াও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত করা একটি কপি জমা দিতে হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরি করে বিদেশে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলা হচ্ছে, ‘বাংলাদেশে ইস্যুকৃত জন্ম নিবন্ধন সনদগুলোতে অসত্য তথ্য দেয়ার সুযোগ রয়েছে।’ ধারণা করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্টপ্রাপ্তি বন্ধ ও ‘পাসপোর্ট আবেদনকারী ও তার পরিবার বাংলাদেশের নাগরিক’-এটা প্রমাণের জন্যই এনআইডি প্রদর্শনের বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এর আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে একই ধরনের অফিস আদেশ জারি করা হয়েছিল। তবে আদেশ জারির পরও কর্মকর্তারা এনআইডি না দেখেই জন্ম নিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণ করতেন।

তবে এ জন্য অবশ্য একটি কারণ দেখাতেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা জানান, অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদনের সময় নিবন্ধন সনদ নম্বরের ঘরে একটি ‘রেড স্টার (বাধ্যতামূলক চিহ্ন)’ দেয়া থাকে। এনআইডি নম্বর না দিলেও আবেদন গ্রহণ করা হয়। এ কারণে অনেকেই অনলাইনে ত্রুটিপূর্ণ ওই ফরম পূরণ করে এনে জমা দেয়। যেহেতু এটা অধিদফতরের সমস্যা তাই অনেক ক্ষেত্রে এনআইডি না দেখেই আবেদনপত্র গ্রহণ করা হত।

পাসপোর্ট আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজন

১। পাসপোর্ট আবেদনের পূরণকৃত নির্ধারিত ফর্ম। আবেদনকারী নতুন হলে দুই কপি ও পুরাতন হলে ১ কপি পূরণ করতে হবে।
২। দুইকপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি আঠা দিয়ে লাগাতে হবে।
৩। এনআইডির মূল কপি দেখাতে হবে এবং সত্যায়িত করা দুই কপি ফটোকপি জমা দিতে হবে।
৪। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাবা-মা’র স্ট্যাম্প সাইজের ছবি ও উভয়ের এনআইডির সত্যায়িত ফটোকপি।
৫। অফিসিয়াল পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সরকারি জিও’র কপি।
৬। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে পেনশন বুকের ফটোকপি।
৭। পেশাগত সনদের সত্যায়িত কপি।

আবেদন ফর্ম যারা সত্যায়িত করতে পারবেন

১. সংসদ সদস্য ২. সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, ডেপুটি মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ৩. গেজেটেড কর্মকর্তা ৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ৫. উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ৬. পৌরসভার মেয়র ৭. বেসরকারি কলেজের শিক্ষক ৮. বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ৯. দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ১০. পৌর কাউন্সিলর ১১. রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা কর্পোরেশনের নতুন জাতীয় বেতন স্কেলের সপ্তম বা তদূর্ধ্ব গ্রেডের কর্মকর্তারা।