এশিয়াতেও জঙ্গিবাদ দক্ষিণ বিস্তৃতি লাভ করেছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

0
472
blank

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় দক্ষিণ এশিয়াতেও বিস্তৃতি লাভ করেছে, যা আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য হুমকিস্বরূপ। এরূপ বাস্তবতায় নিরাপত্তা সহযোগিতার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়াকে একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ অঞ্চলের দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে বাংলাদেশের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিশ্ব নেতারা। সম্প্রতি জাপানে অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনের সময় বিশ্ব নেতাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ এই প্রশংসা পায় বলে তিনি জানান। সংসদে আজ প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিনের (নাছিম) এক প্রশ্নের জবাবে এবং জাতীয় পার্টির নূর ই হাসনা লিলি চৌধুরীর এক সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন্। সকালে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত। অবশ্য পরে অন্যান্য মন্ত্রীদের জন্য প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

বাহাউদ্দিন নাছিমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কোলকাতায় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দেওয়া রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে সর্বপ্রথম দক্ষিণ এশিয়ার জন্য আঞ্চলিক কূটনীতির যে ধারণা তুলে ধরেন, তাতে দক্ষিণ এশিয়াকে একটি দারিদ্রমুক্ত শান্তিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর প্রণীত এ ধারণার ওপর ভিত্তি করেই শুরু হয় বাংলাদেশের আঞ্চলিক কূটনীতিক যাত্রা। এর ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ এশিয়াকে একটি দারিদ্রমুক্ত, শান্তিপুর্ণ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন দেশের সাথে বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশসমুহের সাথে সংযোগ প্রতিষ্ঠা, যা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক সংস্থা সার্ব ও বিমসটেকের আওতায় বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক চুক্তি/ সমঝোতা স্মারক/ কনভেনশন আছে। এই চুক্তি/ সমঝোতা স্মারকসমুহ বাস্তবায়নের স্বার্থে এদের আওতায় বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাদি গৃহীত হয়েছে বা হচ্ছে। সার্কের সদস্যভূক্ত অন্যান্য দেশসমুহের সাথে সমন্বয় করে আমরা সার্কের ধ্যান ধারণাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগ্রামী ভূমিকা পালন করছি। এছাড়াও বিমসটেক-এর সচিবালয়ের স্বগতিক দেশ হিসেবে আমরা বিমসটেক প্রক্রিয়াটিকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি শক্তিশালী অনুঘটক হিসেবে ব্যবহার করছি। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূলের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়াকে একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ সবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিকভাবে ভারতের সাথে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাদির মাধ্যমে আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূলে এবং নিরাপত্তা সহযোগিতার ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরকে সহায়তা করছি। এই ধারাবাহিকতায় ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা ও কার্যক্রম অব্যাহত আছে। কাজেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ে বিভিন্ন বিশেষায়িত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্ষেত্রভিত্তিক সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মুক্তিযদ্ধের মূল চেতনা ছিল ক্ষুধা, দারিদ্র, শোষণ ও বঞ্ছনামুক্ত বাংলাদেশ গড়া। আমরা মুক্তিযুদ্ধের এ চেতনার বিস্তৃতি ঘটিয়ে বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়াকেও একটি দারিদ্রমুক্ত, শান্তিপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছি।