ওসমানীনগরে হত্যা মামলার চার্জসিট থেকে আসামীদের বাদ দেয়ার অভিযোগ

0
1056
blank
blank

স্টাফ রিপোর্টার: সিলটের ওসমানীনগর উপজেলায় বহুল আলোচিত রিপন হত্যা মামলার চার্জসিট থেকে মূল আসামীদরে বাদ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলার অধিকাংশ আসামীরা জামিনে থাকায় নিরাপত্তাহীনতার ভূগছেন বাদীর পরিবার। মামলার আসামীরা এলাকায় প্রকাশে ঘূরে বেড়াচ্ছে। এমনকি বাদীক মামলা তুলে নিতে অব্যাহতভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এনিয়ে চরম আততংকে দিন কাটাচ্ছেন বাদী ও তার পরিবার। এমতাবস্থায় স্থানীয় থানা পুলিশ ব্যাতিত অন্য যেকোন সংস্থা দিয়ে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করার জন্য দাবী জানিয়ে ওসমানীনগর উপজেলার ১০ নং উসমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের পড়িয়ারখাই গ্রামের স্থায়ী বাসিন্ধা মৃত মন্তাজ উল্লাহর পুত্র জিলু মিয়া। শনিবার সকালে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের ড. রাগীব আলী মিলনায়তের আয়োজিত এক জনাকির্ণ সংবাদ সম্মেলনের এসব কথা জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, একই গ্রামের ছালিক মিয়া, দুলু মিয়া, আব্দুল কাইয়ুম, জুনেদ মিয়া, কালাম মিয়া, শরীফ মিয়া, ছালাম মিয়া গংদের সাথে দীর্ঘ দিন থেকে তার ছোট ভাই ক্বারী সিরাজুল ইসলাম রিপনের রাস্তা নিয়ে বিরোধ চলছিল। তারা বিভিন্ন সময়ে একই গ্রামের মৃত রশিদ আহমদের পুত্র লন্ডন প্রবাসী হেলাল মিয়ার প্ররোচনায় রিপনকে প্রাণে হত্যার হুমকিও দেয়। এর জের ধরে ১৯/০৭/২০১৪ রিপন জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ওসমানীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। জিডি নং ৮৪৮। জিডি করার এক বছর পর গত ১৪ জুলাই নিখোঁজ হন ক্বারী সিরাজুল ইসলাম রিপন। নিখোঁজের এর পরদিন ১৫ জুলাই বিবাদীদরে বাড়ির পাশ থেকে রিপনের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ১৬ জুলাই উপরে উলে­খিতদের বিবাদী করে জিলু মিয়া বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৫।

লিখিত বক্তব্যে জিলু মিয়া বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকে ওসমানীনগর থানা পুলিশ আমাদের সাথে রহস্যজনক আচরণ করতে থাকে। আসামীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘূরে বেড়ালেও তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আমরা সিলেটের পুলিশ সুপার মহোদয়কেও লিখিত ভাবে জানিয়েছিলাম। সর্বশেষ গত ৮ নভেম্বর আমরা একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছি। সংবাদ সম্মেলনের পর গত ২২ নভেম্বর ওসমানীনগর থানা পুলিশ মামলাটির চার্জসিট আদালতে দাখিল করে। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মামলার এজহারে ৭জন আসামীর নাম থাকার পরও ওসমানীনগর থানা পুলিশ মামলার প্রধান অভিযুক্ত আসামী সহ এজহার নমীয় ৬জন আসামীকে চার্জসিট থেকে অব্যাহতি দিয়ে দেয়। চার্জসিট থেকে মাত্র একজনকে অভিযুক্ত করে এবং এই মামলার অন্যতম আসামী বর্তমানে কারাগারে আটক আব্দুর রহমানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে স্বীকারোক্তি দানকারী চক আতাউল্লাহ গ্রামের আব্দুর রহমান, বেতখাই গ্রামের জিলু মিয়া, শাহীন মিয়া ও ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী পড়িয়ারখাইর গ্রামের হেলাল আহমদ চৌধুরীকে অভিযুক্ত করে চার্জসিট দেয় পুলিশ। এখানে আমাদের এজহার নমীয় মূল আসামী-ছালিক মিয়া, দুলু মিয়া, জুনেদ মিয়া, কামাল মিয়া, শরীফ মিয়া ও ছালাম মিয়াকে কৌশলে চার্জসিট থেকে বাদ দেয় ওসমানীনগর থানা পুলিশ।

তিনি দাবী করেন, বর্তমানে মামলার সকল আসামীগণ এলাকায় প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে ৫লক্ষ টাকা দিয়ে মামলাটি খেয়ে ফেলেছে। পুলিশকে ম্যানেজ করে
চার্জসিট থেকে প্রাথমিক অব্যাহতি পেয়ে বাদী পক্ষকে পরিবারকে প্রাণ নাশের
হুমকি দিচ্ছে।

এমতাবস্থায় মামলাটি পুনঃতদন্ত করার জন্য অন্য যেকোন সংস্থাকে দ্বায়িত্ব
দিতে বিচার বিভাগের প্রতি দাবী জানিয়ে নিহতের বড় ভাই বলেন, আমার দৃঢ়
বিশ্বাষ মামলাটি পুনরায় নিরপেক্ষ তদন্ত হলে এজহার নমীয় সকল আসামীর
বিরোদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কাজী তুহেল
আহমদ, নিহতের মামা সিদ্দেক আলী, আহাদ মিয়া, ফয়সল আহমদ, আশরাফ আলী, রুবেল
আহমদ প্রমূখ।