ওসি মোয়াজ্জেম দেশেই, যেকোনো মুহূর্তে গ্রেফতার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0
549
blank
blank

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ওয়ারেন্ট জারি হওয়া ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন দেশেই আছেন। তার দেশত্যাগের সব পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে তিনি গ্রেফতার হবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বুধবার রাজধানীর বকশীবাজারে কারা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত ‘কারা অধিদফতরের উদ্ভাবনী মেলা ও শোকেসিং-২০১৯’ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে ধরা যাচ্ছে না, বিষয়টি ঠিক নয়। তার দেশত্যাগের সব পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তিনি দেশেই আছেন। আর যেকোনো সময় তাকে গ্রেফতার করা হবে।

দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে ডিআইজি মিজানের ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ডিআইজি মিজান ঘুষ কেন দিয়েছেন, নিশ্চয়ই তার কোনো দুর্বলতা আছে। সেই দুর্বলতা ঢাকতেই তিনি ঘুষ দিয়েছেন। না হয় ঘুষ দেবেন কেন? ঘুষ দেয়া-নেয়া দুটোই অপরাধ। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে এর আগের বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার এখনও প্রক্রিয়াধীন। এর মধ্যে আবার ঘুষ কেলেঙ্কারি। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

২৬ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা তার অফিসকক্ষে ডেকে নিয়ে মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানি করেন।

রাফি এর প্রতিবাদ করেন এবং এ বিষয়ে রাফির মা শিরীন আক্তার মামলা করলে পুলিশ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠান।

ওই মামলা প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছিল নুসরাত ও তার পরিবারকে। কিন্তু মামলা তুলে না নেয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে রাফির গায়ে আগুন দেয় বোরকা পরা কয়েকজন। আগুনে শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া রাফি ১০ এপ্রিল রাতে হাসপাতালে মারা যান। তিনি বলেন, রাফির গায়ে আগুন দেয়ার পর ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। রাফির মৃত্যুর পর তা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।

হত্যাকাণ্ডের দিন দশেক আগে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান নুসরাত। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সেই সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পরোয়ানা জারির দুদিন পর মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।