কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলল পাকিস্তান

0
525
blank
blank

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলল পাকিস্তান। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কার্যালয় থেকে আজ সোমবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিরীহ নাগরিকের ওপর মাত্রাছাড়া শক্তিপ্রয়োগ হয়েছে। ভারতের উচিত মানবাধিকারকে রক্ষা ও সম্মান করা। পাকিস্তানের এই প্রতিক্রিয়ার প্রভাব উপত্যকায় পড়ে কি না, সে দিকে রাজ্য প্রশাসনকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম এএনআই জানায়, নওয়াজ শরিফ বলেছেন, কাশ্মীরের জনসাধারণকে ভয় দেখিয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবি থেকে সরানো যাবে না। ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেন, জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী ভারতের উচিত কাশ্মীরে গণভোটের ব্যবস্থা করা।

পাকিস্তানের এই প্রতিক্রিয়ার জবাব ভারত সন্ধ্যা পর্যন্ত দেয়নি। তবে জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক আজ থেকে খুলে দেওয়া হয়। অমরনাথ যাত্রীরা যাঁরা দুদিন ধরে জম্মুতে অপেক্ষা করছিলেন, তাঁদেরও উপত্যকায় যেতে দেওয়া হয়।

কাশ্মীরের পরিস্থিতি তৃতীয় দিনেও স্বাভাবিক হয়নি। গোটা উপত্যকা থমথমে। হিংসাত্মক ঘটনার এখনো পর্যন্ত প্রাণ গেছে ২৩ জনের। শ্রীনগরসহ অন্যত্র কারফিউ তৃতীয় দিনেও শিথিল হয়নি। বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদেরও নজরবন্দী রাখা হয়েছে। তবে অন্যদিনের তুলনায় আজ উপত্যকা ছিল শান্ত।

মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি রাজ্যবাসীকে শান্তি ফেরানোর জন্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন। সব রাজনৈতিক দলকেই এ অনুরোধ জানানো হয়েছে। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এর জবাবে বলেছেন, তিনি পূর্ণ সহযোগিতায় রাজি। তবে সে জন্য মেহবুবাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। মেহবুবা এখনো কোনো উপদ্রুত অঞ্চলে যাননি। গতকাল রোববার তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিরাপত্তারক্ষীরা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বলপ্রয়োগ করেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।

গত দুই দিন চুপ থাকার পর পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী আজ কেন প্রতিক্রিয়া জানালেন, আপাতত তা নিয়ে জল্পনা চলছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতীয় সেনা ও আধা সামরিক বাহিনীর হাতে কাশ্মীরি নেতা বুরহান ওয়ানি এবং অনেক নাগরিকের মৃত্যুর খবরে প্রধানমন্ত্রী গভীর শোকাহত। এর আগে গত শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলেছিলেন, বুরহান ওয়ানি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার। কিন্তু ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা উপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়।

আজ পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে পাঠানো বিবৃতির পাশাপাশি ভারতের পক্ষে আরও একটি বিরক্তিকর খবর আসে। মুম্বাই হামলার খলনায়ক বলে ভারত যাকে অভিহিত করে, সেই হাফিজ সাঈদ পাকিস্তানি অধিকৃত কাশ্মীরে বুরহানের মৃত্যুতে আয়োজিত এক স্মরণসভায় ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ভারতের কপালে আরও অনেক বুরহান ওয়ানি অপেক্ষা করে রয়েছে। একই দিনে এই দুই খবরের কোনো প্রতিক্রিয়া ভারত দেয় কি না তা দেখার।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আফ্রিকার চার দেশ সফর শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার দিল্লি ফিরছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। দুজনই তাঁকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। হাফিজ সাঈদের মন্তব্য নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রের কথায়, সাঈদের বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই সূত্র অনুযায়ী, দু–একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ২০১২ সালের পুনরাবৃত্তি দেখা যেতে পারে। ওই বছরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নিহত হয়েছিলেন ১১২ জন কাশ্মীরি যুবক।