ঢাকা: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি বলেছেন, ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ৩ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ ক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের নিরাপদে দেশত্যাগে সহায়তা করেন। এ পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধা সিপাহীরা অফিসারদের ক্ষমতার জঘন্য কামড়া-কামড়ি, হানাহানির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এ চরম সংকট ও নেতৃত্বহীনতার মধ্যে দায়িত্বশীলতার সাথে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্নেল তাহেরসহ জাসদের নেতারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্রোহী সিপাহীদের ঐক্যবদ্ধ করে সেনাবাহিনীতে শৃংখলা ফিরিয়ে আনে। আজ শনিবার হাসানুল হক ইনু এমপি সন্ধ্যায় নগরীর শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন।
ইনু আরো বলেন, সে সময় ওই সংকট থেকে বের করে এনে দেশকে গণতন্ত্রের পথে পরিচালিত করতে জাসদ ১২ দফা প্রস্তাব দিয়ে বলিষ্ঠ হস্তক্ষেপ করে। খন্দকার মোশতাকের পুন:ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টা রুখে দেয়। সেনাবাহিনী কসাইখানায় পরিণত হওয়া থেকে রক্ষা করে। কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে বিদ্রোহী সিপাহীরা বন্দী জিয়াকে মুক্ত করে নতুন জীবন দান করে। ইনু বলেন, জিয়া মুক্ত হয়েই বিশ্বাসঘাতকতার পথে পা বাড়ান। নতুন জীবন দানকারী কর্নেল তাহেরকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় প্রহসণমূলক বিচার করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে। জাসদ নেতৃবৃন্দ ও সিপাহীদের জেল দেয়। এভাবেই জিয়া বাংলার ইতিহাসে চতুর্থ মীর জাফর হিসেবে নিজের স্থান করে নেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালতও জিয়াকে ঠাণ্ড মাথার খুনি হিসেবে চিহ্নিত করেন। ইনু বলেন, জিয়াউর রহমান দেশকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ধারায় ঠেলে দেয়া, যুদ্ধাপরাধী-রাজাকার-আলবদরদের পুনর্বাসন ও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দায়মুক্তি দেয়া, সংবিধান থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসহ রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি নির্বাসিত করে দেশের উপর এক জঘন্য নষ্ট-ভ্রষ্ট রাজনীতি চাপিয়ে দেয়। তার নষ্ট ও ভ্রষ্ট রাজনীতির ধারা বেগম জিয়া এখনো ধারন করে আছেন। বেগম জিয়া এই চক্রান্তের শক্তি জামায়াত-জঙ্গী-হেফাজতকে সাথে নিয়ে একের পর এক দেশ বিরোধী, সংবিধান-গণতন্ত্র বিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত। তাই বেগম জিয়া-জামায়াত-জঙ্গী-হেফাজতের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র নির্মূল করে খলনায়ক জিয়ার বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিশোধ নিতে হবে।
সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, জিয়া সংহতি দিবসের নামে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি সৎ, দেশপ্রেমিক, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য শিরীন আখতার এমপি, সহ-সভাপতি মীর হোসাইন আখতার, অ্যাডভোকেট রবিউল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন খান, মো: খালেদ, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান শওকত, সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নু, নুরুল আখতার, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সার্জেন্ট রফিকুল ইসলাম বীর প্রতীক, ঢাকা মহানগর উত্তর জাসদের সভাপতি শফি উদ্দিন মোল্লা, ঢাকা মহানগর পূর্ব জাসদের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম শাহ আলম, জাতীয় যুব জোটের সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি সামসুল ইসলাম সুমন প্রমুখ।