ঘুষ নিয়ে দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী

0
507
blank
blank

ঘুষ নিয়ে দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। গতকাল মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেছেন, রোববার  পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের অনুষ্ঠানে দেয়া তার বক্তব্য কিছু গণমাধ্যমে খণ্ডিতভাবে আসায় বিভ্রান্তির তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের দুর্নীতি দুঃশাসনের আমলকে বুঝিয়েছেন। তিনি বলেন, ওই সময়ে দুর্নীতির পরিবেশ বোঝাতে ‘মন্ত্রীরা চোর’ বলেছিলাম। সংবাদ সম্মেলনে দুই পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য পাঠের পর সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি মন্ত্রী। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে চাইলে তিনি লিখিত বক্তব্যের বাইরে কোনো কথা বলবেন না বলে জানান।

লিখিত বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গত ২৪শে ডিসেম্বর শিক্ষা ভবনের একটি অনুষ্ঠানের সংবাদ বেশির ভাগ গণমাধ্যমে যথাযথভাবে তুলে ধরা হলেও কতিপয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় আমার বক্তব্য খণ্ডিতভাবে প্রকাশিত হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

সেই বিভ্রান্তির উপর ভিত্তি করেই কতিপয় বিশিষ্টজন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মতামতও জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সে বিষয়টি স্পষ্টীকরণের জন্য আজকের এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে বৈঠকে বসেছিলাম। সেখানে আমি বলেছিলাম- আমাদের সম্পদ কম। যতটুকুসম্পদ আছে তার সবটুকু সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে হবে। দুর্নীতি, অপচয় এবং অপব্যয় বন্ধ করতে হবে।
এক টাকা দিয়ে দুই টাকার কাজ করতে হবে। সেই ধারাবাহিকতায় অব্যাহতভাবে নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা ও পরিদপ্তরে এই ধারনা পরিষ্কার হয়েছে। অভূতপূর্ব অগ্রগতি ঘটেছে শিক্ষা খাতের বিভিন্ন অঙ্গে। ভর্তি, ক্লাস, পরীক্ষা, শিক্ষাক্রম, অবকাঠামো, তথ্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, জবাবদিহিতা, শৃঙ্খলাসহ সর্বক্ষেত্রে আধুনিকায়ন ও পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এসব পরিবর্তনের অংশীদার আপনারাও। প্রথম থেকেই আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা আমি পেয়ে এসেছি।

মন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর ও সংস্থাসমূহের মধ্যে ভাবমূর্তির দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। চরম দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, মনিটরিং দুর্বলতা ছিল দৃশ্যমান। কর্মকর্তারা ঘুষ-দুর্নীতিতে ছিল আকণ্ঠ নিমজ্জিত। এসবই ছিল পূর্ববর্তী বিএনপি-জামায়াত সরকারের অপশাসনের ফসল। সেই সময় ডিআইএ কর্মকর্তারা স্কুল-কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে অসহায় শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকার ঘুষের খাম গ্রহণ করার সময় বলতো এর ভাগ উপরেও দিতে হয়। তাতে শিক্ষক-কর্মচারীরা মনে করতে বাধ্য হতো- তাদের প্রদত্ত ঘুষ শুধু পরিদর্শনকারী অফিসাররাই খায়না, ঊর্ধ্বতন আমলারাও পায়, এমনকি মন্ত্রী হিসেবে আমিও পাই। স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষক-কর্মচারীরা মনে করতো- ‘অফিসাররা চোর, মন্ত্রীও চোর’।