কুষ্টিয়া: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সহ-সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা গেছে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শনিবার সহ-সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে মিছিল বের করলে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। একইসঙ্গে শনিবার বিকাল ৫টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নিদের্শ দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষের পর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে শনিবার ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজু গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা তাদের দলীয় টেন্ট ও সহ-সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের পাশে টেন্টে অবস্থান করছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সহ-সভাপতি পক্ষের কর্মীরা মিছিল বের করে। মিছিল থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার ও ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের নেতা শিশির ইসলাম বাবুকে উদ্দেশ্য করে উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা সহ-সভাপতি গ্রুপের দিকে লাঠিসোটা নিয়ে তেড়ে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এসময় ৮ রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সহ-সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সভাপতি গ্রুপকে ধাওয়া দিলে তারা পিছু হটে বঙ্গবন্ধু হল এলাকায় অবস্থান নেয়। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন, অর্থনীতি বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র আবদুর রহিম, বহিরাগত বসির, কম্পিউটার সাইন্স বিভাগের আতাউর শোভন, ইতিহাস বিভাগের অনিক প্রমুখ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষে সহ-সভাপতি গ্রুপে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় বহিরাগত, কুষ্টিয়া ছাত্রলীগের একাধিক নেতা ও চরমপন্থি ক্যাডাররা উপস্থিত ছিল। সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, পুলিশ সহ-সভাপতি গ্রুপের পক্ষ নিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষের ঘটনায় বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা টেন্টে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা আমাদেরকে লক্ষ্য করে অতর্কিত গুলি ছোঁড়ে। আমরা এ ঘটনার পাল্টা প্রতিরোধ করেছি। এসময় পুলিশের বর্তমান ওসির নেতৃত্বে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি গ্রুপের জুয়েল রানা হালিম বলেন, সভাপতি গ্রুপ থেকে আমাদেরকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি করা হয়েছে। আমরা এর জবাব দিয়েছি। ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। তবে কোনো পক্ষকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়নি। বর্তমান ক্যাম্পাস পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত আছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.