ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক নেতা নিহত, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ

0
570
blank
blank

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু হলের ভেতরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে দলের এক নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। শোকের মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে মোমবাতি প্রজ্বলনের পর গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্রদের বেলা ১১টা ও ছাত্রীদের বেলা দুইটার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপাচার্য মো. আলী আশরাফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নিহত খালিদ সাইফুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও কবি নজরুল হলের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আজ সোমবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায়।

সংঘর্ষের সময় আতঙ্কে হল থেকে লাফিয়ে পড়ে, গুলিতে ও রামদার কোপে অন্তত নয়জন আহত হয়েছে। তারা কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ও প্রশাসন বলছে, গতকাল দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু হলে শোকের মাসে ছাত্রলীগের উদ্যোগে মোমবাতি জ্বালানো হয়। কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইলিয়াস হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ৫০ থেকে ৬০ জন কর্মী বঙ্গবন্ধু হলে যান। হলের ভেতরে দুই পক্ষের মধ্যে এলোপাতাড়ি গুলিবিনিময় হয়। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজা ই এলাহীর কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। কয়েকজনের কাছে রামদা, পিস্তল ছিল। সংঘর্ষের একপর্যায়ে খালিদের মাথায় গুলি লাগে। তাঁকে প্রথমে কুমিল্লার স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আজ ভোরে তিনি মারা যান।

সংঘর্ষের জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসানের ভাষ্য, ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইলিয়াস হোসেনের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হলে ঢুকে হামলা চালানো হয়েছে। আমরা ছিলাম নিরস্ত্র।’

ইলিয়াস হোসেনের ভাষ্য, বিপ্লব নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী বহিরাগত যুবকদের নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। এত রাতে বঙ্গবন্ধু হলে কেন গিয়েছিলেন, জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মো. আইনুল হক বলেন, ছাত্রলীগের এক পক্ষ মধ্যরাতে আরেক হলে এসে গুলি ছোড়ে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন নয়জন।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আবদুল্লাহ আল মামুনের ভাষ্য, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের গুলিবিনিময়ে একজন নিহত হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন থেকে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। প্রতিষ্ঠার পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রথম এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

বঙ্গবন্ধু হলে পুলিশের তল্লাশি চলছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ কুণ্ডু গুপী দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।